হিন্দু ধর্মে বছরে ২৪টি একাদশী ব্রত পালন করা হয়, যা প্রতি মাসে দু’বার আসে। প্রতিটি একাদশী ব্রতের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বিশ্বাস করা হয় যে, একাদশী তিথিতে ভগবান বিষ্ণু এবং দেবী লক্ষ্মীর বিশেষ পূজা করলে ভক্তরা শুভ ফল লাভ করেন এবং তাঁদের সমস্ত মনোকামনা পূর্ণ হয়।

আমলকী একাদশী কবে পালিত হয়?

আমলকী একাদশী প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশী তিথিতে উদযাপিত হয়। এই দিনে আমলকীর সাথে সম্পর্কিত কিছু বিশেষ উপায় অবলম্বন করলে সন্তান সুখ, দ্রুত বিবাহ এবং সুখী দাম্পত্য জীবনের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

শুভ যোগের মধ্যে পালিত হবে আমলকী একাদশী

বৈদিক পঞ্জিকা অনুসারে, এ বছর আমলকী একাদশীতে তিনটি শুভ যোগ তৈরি হচ্ছে—শোভন যোগ, সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ এবং পুষ্য নক্ষত্র। এই শুভ সংযোগগুলোর কারণে এই একাদশীর গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। মনে করা হয়, এই দিনে করা আমলকীর কিছু বিশেষ উপায় ভাগ্যের তালা খুলতে পারে।

বিবাহিত জীবনে সুখ-সমৃদ্ধির জন্য

যদি দাম্পত্য জীবনে অশান্তি বিরাজ করে, তাহলে স্বামী-স্ত্রীকে একসঙ্গে আমলকী একাদশীর ব্রত রাখা উচিত। এই দিনে আমলকী গাছের নিচে বসে ভগবান বিষ্ণু ও দেবী লক্ষ্মীর পূজা করুন এবং প্রসাদ হিসেবে আমলকীর ফল নিবেদন করুন। এটি দাম্পত্য জীবন সুখময় করবে।

দ্রুত বিবাহের জন্য

যারা মনমতো জীবনসঙ্গী পেতে চান বা বিবাহে বিলম্ব হচ্ছে, তাদের আমলকী একাদশীর দিনে ব্রত রেখে ভগবান বিষ্ণুর পূজা করা উচিত। বিষ্ণু দেবকে আমলকী নিবেদন করুন। এটি বিবাহের যোগ তৈরি করবে এবং দ্রুত শুভ বিবাহ সম্পন্ন হতে পারে।

সকল মনোকামনা পূরণের জন্য

আমলকী একাদশীর দিনে ভগবান বিষ্ণুর “ॐ नमो भगवते वासुदेवाय नमः” মন্ত্রটি জপ করা উচিত। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী মন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয় এবং নিয়মিত জপ করলে ইচ্ছাপূরণ হতে পারে।

সন্তান সুখ লাভের জন্য

যদি বিবাহের বহু বছর পরও সন্তান লাভ না হয়, তাহলে আমলকী একাদশীর ব্রত পালন করুন। ভগবান বিষ্ণু ও দেবী লক্ষ্মীর পূজা করে মিষ্টি আমলকীর ভোগ নিবেদন করুন। এরপর ৫ বা ১১টি শিশুকে আমলকীর মোরব্বা বা আমলকীর টফি খাওয়ান। এতে শ্রীহরির কৃপায় সন্তান সুখ লাভ হতে পারে।

জীবনের কষ্ট দূর করার জন্য

যদি জীবনে কঠিন সময় চলছে, তাহলে এই দিনে ব্রত গ্রহণ করে বিধিপূর্বক ভগবান বিষ্ণুর পূজা করুন। পূজার পর আমলকী গাছে জল নিবেদন করুন। এটি করলে ভগবান নারায়ণের কৃপা লাভ হবে এবং ধীরে ধীরে সমস্ত সমস্যা দূর হতে থাকবে।