ঋণ, বিলাসিতা এবং তারপর পলায়ন! ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব কিনলেন, ভারতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন পলাতক মোদি, এবার ঘুরবেন সারা বিশ্বে

আইপিএলের প্রাক্তন সভাপতি এবং পলাতক ব্যবসায়ী ললিত মোদি ভারতীয় নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত ছোট্ট দ্বীপ দেশ ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন।
এই দেশটির জনসংখ্যা পুদুচেরির থেকেও কম, তবে এর সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো এখানে কোনো কর (ট্যাক্স) দিতে হয় না। দেশটির ‘গোল্ডেন পাসপোর্ট স্কিম’-এর অধীনে মাত্র ১.৩ কোটি টাকার বিনিময়ে নাগরিকত্ব কেনা সম্ভব। এই নাগরিকত্ব পাওয়ার পর ললিত মোদি ১২০টি দেশে ভিসা-ফ্রি ভ্রমণের সুবিধা পাবেন। তবে, তার বিরুদ্ধে ভারতে চলমান আইনি কার্যক্রম এতে কোনোভাবে প্রভাবিত হবে না।
ললিত মোদি লন্ডনে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনে তার পাসপোর্ট জমা দেওয়ার আবেদন করেছেন, যা এই খবরকে আরও আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।
কী এই ভানুয়াতু এবং কেন তিনি এই দেশের নাগরিকত্ব বেছে নিলেন
ভানুয়াতু হলো একটি দ্বীপ রাষ্ট্র, যা অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। এই দেশের জনসংখ্যা মাত্র তিন লাখের কাছাকাছি, তবে এটি বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় ‘ট্যাক্স হেভেন’ দেশ হিসেবে পরিচিত। এখানে কোনো আয়কর, সম্পত্তি কর বা কর্পোরেট কর দিতে হয় না।
ভানুয়াতুর ‘গোল্ডেন পাসপোর্ট স্কিম’-এর আওতায় মাত্র কিছু নথি অনলাইনে জমা দিয়ে এবং ১.৩ কোটি টাকা পরিশোধ করলেই নাগরিকত্ব পাওয়া যায়। এই প্রক্রিয়া এক মাসেরও কম সময়ে সম্পন্ন হয় এবং নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য দেশটিতে পা রাখারও প্রয়োজন হয় না।
ললিত মোদির জন্য কেন এই নাগরিকত্ব লাভজনক?
ললিত মোদি ২০১০ সালে ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে যান এবং তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। ভারত সরকার দীর্ঘদিন ধরে তার প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়ে আসছে, তবে তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব ত্যাগ করে আইনি জটিলতা আরও বাড়িয়ে তুলেছেন।
ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব গ্রহণ করার ফলে তিনি বেশ কয়েকটি দেশে বিনা ভিসায় ভ্রমণ করতে পারবেন, যার ফলে তিনি সহজেই বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে যাতায়াত করতে পারবেন। পাশাপাশি, করমুক্ত আর্থিক ব্যবস্থার কারণে তিনি তার সম্পদ সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।
ভারতের আইনি প্রক্রিয়ায় কী প্রভাব পড়বে?
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে ললিত মোদি ভারতীয় পাসপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন এবং নিয়ম অনুযায়ী এটি পর্যালোচনা করা হবে। তবে, এতে তার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর কোনো প্রভাব পড়বে না এবং আইনি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
মজার বিষয় হলো, গত দুই বছরে ৩০ জনেরও বেশি ভারতীয় ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন, যা এটিকে ধনী ভারতীয়দের জন্য নতুন আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তুলছে।