পোপ ফ্রান্সিস: খ্রিস্টধর্মের সেই ধর্মগুরু, যার প্রভাব সারা বিশ্বে! জানুন তার বেতন ও সম্পত্তির পরিমাণ

পোপ ফ্রান্সিস, যিনি খ্রিস্টধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু, তার মাসিক বেতন পাওয়ার একটি প্রথা রয়েছে। তার মাসিক বেতন ৩২,০০০ ডলার (প্রায় ২৬,৫২,৪৮০ টাকা), যা বার্ষিক প্রায় ৩,৮৪,০০০ ডলার (প্রায় ৩১,৮২,৯৭,৬০০ টাকা) হয়।
তবে, পোপ ফ্রান্সিস ২০১৩ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নিজের বেতন নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি তার সম্পূর্ণ বেতন দান করে দেন, যা বিভিন্ন দাতব্য কাজ, অনাথ শিশুদের শিক্ষা, দরিদ্রদের সাহায্য এবং চার্চের উন্নয়নে ব্যবহৃত হয়।
বেতন ও সম্পত্তি
পোপ ফ্রান্সিসের ব্যক্তিগতভাবে কোনো বিশাল সম্পত্তি নেই, কারণ তার সম্পূর্ণ সম্পত্তি তার পদ সংক্রান্ত, ব্যক্তিগতভাবে নয়। প্রতিবেদনের মতে, পোপের মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ২৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২০৭ কোটি টাকা), যা তার পদ সম্পর্কিত।
এই সম্পত্তির মধ্যে পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়ি, বিভিন্ন সম্পত্তি এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে, পোপ নিজে কোনো উপহার বা দান নিজের কাছে রাখেন না; বরং সবকিছু চার্চের কাজে দান করে দেন।
প্রতি বছর পোপের নামে কোটি কোটি টাকার অনুদান ও উপহার আসে, যা সরাসরি চার্চের কাজে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দাতা রথসচাইল্ড পরিবার, যদিও তারা ইহুদি। এছাড়া, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (WEF) সভাপতি ক্লাউস শোয়াব ও ওয়ালমার্টের প্রতিষ্ঠাতা ওয়ালটন পরিবারও পোপকে অনুদান দেন। পোপের উপহার বাবদ বার্ষিক আয় প্রায় ২.৯ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৩ কোটি টাকা)।
রিয়েল এস্টেট ও নিরাপত্তা ব্যয়
পোপের রিয়েল এস্টেট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৬ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৩২ কোটি টাকা)। তার জীবনযাত্রা ও ব্যয়ের বিষয়গুলো যেমন খাদ্য, ভ্রমণ এবং আবাসনের খরচ ভ্যাটিকানের কিউরিয়া ফান্ড থেকে বহন করা হয়। এছাড়া, ভ্যাটিকান তার নিরাপত্তা, অন্যান্য ব্যয় এবং দায়িত্বগুলোও পরিচালনা করে।
পোপের জীবনধারা
ভ্যাটিকান একবার নিশ্চিত করেছিল যে পোপ ফ্রান্সিস শুরু থেকেই যিশু খ্রিস্টের প্রকৃত নীতিগুলোর অনুসরণ করে আসছেন। তিনি চার্চ থেকে কোনো ব্যক্তিগত অর্থ গ্রহণ করেননি এবং তার জীবন অত্যন্ত সরল।
পোপ ফ্রান্সিস একটি আদর্শ উদাহরণ স্থাপন করেছেন যে একজন ব্যক্তি ধর্মীয় পদে থেকেও বিলাসিতা ও ব্যক্তিগত সম্পদের প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে কেবল মানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে পারেন।
অতএব, পোপ ফ্রান্সিসের সম্পত্তি ও বেতনের মূল উদ্দেশ্য হলো চার্চ ও মানবতার সেবা, এবং তার জীবনযাত্রা সম্পূর্ণরূপে ভ্যাটিকানের নীতি ও যিশু খ্রিস্টের আদর্শের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।