ইসরায়েল গাজাকে অন্ধকারে ডুবিয়ে দিয়েছে, সম্পূর্ণভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে বিরোধ চলমান

ইসরায়েল গাজাকে অন্ধকারে ডুবিয়ে দিয়েছে, সম্পূর্ণভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে বিরোধ চলমান

ইসরায়েল জানিয়েছে যে তারা গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিচ্ছে। এর সম্পূর্ণ প্রভাব এখনও স্পষ্ট নয়, তবে এই অঞ্চলে এমন বেশ কিছু প্ল্যান্ট রয়েছে যেগুলো পানযোগ্য জল উৎপাদনের জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহার করে।

এই প্ল্যান্টগুলোর মাধ্যমে সমুদ্রের লবণাক্ত জল থেকে লবণ অপসারণ করা হয়, যার ফলে তা পানযোগ্য হয়ে ওঠে।

রবিবার এই ঘোষণা এমন সময় এসেছে, যখন এক সপ্তাহ আগে ইসরায়েল গাজায় ২০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। এটি হামাসের ওপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করেছে, যাতে তারা তাদের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপকে আরও এগিয়ে নেয়। এই ধাপটি গত সপ্তাহান্তে শেষ হয়ে গিয়েছিল।

হামাস যুদ্ধবিরতির আরও কঠিন দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু করার ওপর জোর দিচ্ছে। যুদ্ধের কারণে গাজা ব্যাপকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটর ও সৌর প্যানেলের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

গাজায় বিদ্যুৎ সংকট আরও তীব্র

ইসরায়েলের ১৫ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধ অবকাঠামোকে ব্যাপকভাবে ধ্বংস করেছে, যার ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে মৌলিক পরিষেবাগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ পূরণ করতে জেনারেটর ও সৌর প্যানেলের ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে, জাতিসংঘের মতে, গাজা গত এক দশক ধরে “স্থায়ী বিদ্যুৎ ঘাটতির” সম্মুখীন। ২০২২ সালে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিসের তথ্যমতে, গাজার ফিলিস্তিনিরা গড়ে প্রতিদিন মাত্র ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছিল।

গাজায় জলর জন্য বিদ্যুৎ অত্যন্ত জরুরি

বিদ্যুৎ সংকট মৌলিক পরিষেবা, বিশেষ করে পানীয় জলের সরবরাহকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। জল সংক্রান্ত প্রকল্পগুলো বিদ্যুতের অন্যতম প্রধান ভোক্তা। বিদ্যুৎ ছাড়া বিদ্যমান জল ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা বজায় রাখা আসাম্ভব, নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করাও কঠিন। গাজার বহু বাড়িতে ছাদের জলর ট্যাংকে জল তুলতে বিদ্যুৎচালিত পাম্পের ওপর নির্ভর করা হয়। বিদ্যুৎ না থাকলে এই পাম্পগুলো কাজ করতে পারে না, ফলে বাড়িগুলোতে জলর সংকট দেখা দেয়।

শিক্ষার্থীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব

এছাড়া, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে গাজার শিক্ষার্থীদের ওপরও মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। বাড়িতে তারা গ্যাস ল্যাম্প বা মোমবাতির আলোতে পড়াশোনা করতে বাধ্য হচ্ছে, যা তাদের মনোযোগ ও শেখার সক্ষমতাকে ব্যাহত করছে। জেনারেটর আলো সরবরাহ করতে পারে, কিন্তু এগুলো শব্দ করে এবং চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানিও সবসময় পাওয়া যায় না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *