সিরিয়ায় আলভি সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা তীব্র, আসাদ সমর্থকদের ও নতুন সরকারের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ; শত শত মানুষের মৃত্যু

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের শাসন শেষ হওয়ার পরও সহিংসতা থামার নাম নিচ্ছে না। দেশে নতুন ইসলামিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে আলভি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হামলা বেড়ে গেছে। সাম্প্রতিক সংঘর্ষ আসাদ সমর্থক ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে আলভি-প্রধান এলাকায় চলছে, যেখানে এখন পর্যন্ত ১,০০০-র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
এদের মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক বলে জানা গেছে।
আলভি সম্প্রদায়ের লোকেরা কারা?
আলভি সম্প্রদায় শিয়া ইসলামের একটি শাখা, যা সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চল, বিশেষ করে লাটাকিয়া ও টারটুসে বসবাস করে। এই সম্প্রদায় কয়েক দশক ধরে সিরিয়ার শাসনক্ষমতায় প্রভাব বিস্তার করে আসছিল, কারণ সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ নিজেই একজন আলভি ছিলেন। আসাদ শাসনে এই সম্প্রদায় বিশেষ সুবিধা পেত, যা সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি জনগোষ্ঠীর মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছিল।
সিরিয়ায় এখন সহিংসতা কেন বেড়েছে?
আসাদ সরকারের পতনের পর সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে, তবে আলভিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অব্যাহত থাকে। কট্টরপন্থী সুন্নি গোষ্ঠীগুলো আলভিদের আসাদ শাসনের সমর্থক মনে করে তাদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। এই সময়ে বহু সাধারণ নাগরিকও হামলার শিকার হয়েছে।
সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে, যখন সরকার আলভি-প্রধান একটি গ্রাম থেকে এক অভিযুক্ত অপরাধীকে গ্রেফতার করে। এর পর আসাদপন্থী যোদ্ধারা সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালায় এবং আসাদের জন্মস্থান কারদাহায় দখল করে নেয়। তবে, সরকারি সেনারা পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে এলাকাটির পুনর্নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে।
সরকার ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি আহমদ আল-শারাআ সকল পক্ষকে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। সরকার ইতোমধ্যে সহিংসতার তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করেছে, অন্যদিকে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলছে, আলভিদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলা চালানো হচ্ছে।
এদিকে, সিরিয়ার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, সরকার সব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তবে এখনো বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং সহিংসতা দ্রুত শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।