গ্রাহকের ডিভাইসে ‘পেমেন্ট সাকসেসফুল’ লেখা থাকলেও, টাকা অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে না!

UPI বা ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম দৈনন্দিন খুচরা সমস্যার সমাধান করেছে। মুদি দোকান থেকে শুরু করে রাস্তার বিক্রেতারা, প্রায় সকল ছোট ব্যবসায়ের কাছেই স্পিকার ডিভাইস থাকে।
ক্রেতা যখন QR কোড স্ক্যান করে পেমেন্ট করেন, তখন স্পিকারটি বাজবে – ‘আপনার পেমেন্ট সফল হয়েছে।’ গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া অর্থ স্পিকারেও শোনা যাবে।
এবার হ্যাকাররা সেই শব্দ অনুকরণ করছে। গ্রাহকের স্পিকারে টাকা জমা হওয়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে টাকা অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে না! একটি নতুন সাইবার জালিয়াতি দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থায় এই বিষয়ে অনেক অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি, দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং দক্ষিণ ভারতের আরও অনেক রাজ্যে এই ধরনের প্রচুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকেও কিছু অভিযোগ এসেছে। তবে, কলকাতায় এখনও পর্যন্ত ডিজিটাল পেমেন্ট সম্পর্কিত কোনও জালিয়াতির ঘটনা রিপোর্ট করা হয়নি। জালিয়াতি কীভাবে হচ্ছে? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, টেলিগ্রাম অ্যাপে একটি নতুন ‘ইউপিআই পেমেন্ট চ্যানেল’ চালু করা হচ্ছে। বিভিন্ন UPI অ্যাপের জন্য হুবহু রেপ্লিকা ইন্টারফেস রয়েছে। আপনি যদি পেমেন্ট QR কোড স্ক্যান করেন এবং সেই চ্যানেলের মাধ্যমে পেমেন্ট করেন, তাহলে প্রেরকের মোবাইল স্ক্রিনে ‘পেমেন্ট সফল’ সতর্কতা প্রদর্শিত হবে। একই পরিমাণের একটি নিশ্চিতকরণ বার্তা গ্রাহকের ডিভাইসে অবিলম্বে পাঠানো হবে। স্বাভাবিকভাবেই, গ্রাহক আত্মবিশ্বাসী যে টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে জমা হবে। অবশেষে, যখন ব্যবসায়ীরা তাদের ডিজিটাল লেনদেনের সমন্বয় সাধন করে, তখন অনেক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগের তদন্তে জানা গেছে যে টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে গ্রাহকের QR কোড স্ক্যান করে স্পিকার ডিভাইসটি হ্যাক করা হচ্ছে। শুধু টাকা আর ঋণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। পুলিশ সূত্রের দাবি, এই টেলিগ্রাম অ্যাপ চ্যানেলটি একটি সাইবার হ্যাকার গ্যাং তৈরি করেছে। এর সদস্যরা হলেন গ্রুপ অ্যাডমিন। টেলিগ্রামে ডেডার্সদের সেই চ্যানেলে যোগদানের জন্য প্রচার করা হচ্ছে। তবে, বিনামূল্যে সেই চ্যানেলে যোগদান করা সম্ভব নয়। চ্যানেলের সদস্য হতে হলে আপনাকে টাকা দিতে হবে। কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই। সদস্য সংখ্যা ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে টেলিগ্রামে চিঠি লিখেছে। এমনকি মাদ্রাজ হাইকোর্টও টেলিগ্রামে একটি ইমেল পাঠিয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে এই ধরনের ‘ইউপিআই পেমেন্ট চ্যানেল’-এর উপর অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা আরোপের অনুরোধ করা হয়েছে।