ভারতে অনুপ্রবেশকারীদের জন্য কোনও দয়া নেই, বিদেশীদের প্রবেশের ক্ষেত্রেও কঠোর নিয়ম, অমিত শাহ প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছেন, ৪টি আইন পরিবর্তন করা হবে

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজ লোকসভায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করবেন, যার লক্ষ্য ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশী নাগরিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার্স বিল ২০২৫ আইনে পরিণত হওয়ার পর, ভারতের অভিবাসন এবং বিদেশী নাগরিকদের সাথে সম্পর্কিত চারটি পুরনো আইন বাতিল হয়ে যাবে।
এর মধ্যে রয়েছে ১৯৪৬ সালের বিদেশী আইন, ১৯২০ সালের পাসপোর্ট আইন, ১৯৩৯ সালের বিদেশী নিবন্ধন আইন এবং ২০০০ সালের অভিবাসন আইন।
এই বিলে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিদেশী নাগরিকদের প্রবেশ এবং থাকার উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। কোনও ব্যক্তির উপস্থিতি যদি দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ হয় অথবা জাল নথির ভিত্তিতে অবৈধভাবে ভারতে নাগরিকত্ব অর্জন করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিধান করা হয়েছে। অধিকন্তু, যদি কোনও বিদেশী নাগরিকের প্রবেশ অন্য কোনও দেশের সাথে ভারতের সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, তাহলে তাকে দেশে প্রবেশে বাধা দেওয়া যেতে পারে।
এই প্রস্তাবিত আইনের অধীনে, অভিবাসন কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং বাধ্যতামূলক বলে বিবেচিত হবে। এর আগেও, সরকারের কাছে বিদেশী নাগরিকদের ভারতে প্রবেশ বন্ধ করার অধিকার ছিল, কিন্তু কোনও আইনে এই বিধান স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। এখন এই বিলটি এই প্রক্রিয়াটিকে আরও স্পষ্ট এবং কার্যকর করার চেষ্টা করবে।
বিলে বলা হয়েছে যে, যদি কোনও ব্যক্তি বৈধ পাসপোর্ট বা ভ্রমণ নথি ছাড়া ভারতে প্রবেশ করেন, তাহলে তাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যেতে পারে। একই সাথে, যদি কেউ জাল নথি ব্যবহার করে বা জালিয়াতি করে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে দুই বছর থেকে সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান থাকবে। এছাড়াও, এই ধরনের ক্ষেত্রে ১ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানাও করা যেতে পারে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যারা অবৈধভাবে ভারতে অবস্থান করছেন তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, তিনি তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
সরকার এই বিলটিকে ভারতের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব জোরদার করার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছে। এর মাধ্যমে, যেসব বিদেশী নাগরিক জাল নথি নিয়ে ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করছেন অথবা নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে যেকোনো হুমকি তৈরি করতে পারেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংসদে এই বিলটি নিয়ে আলোচনার পর, এটিকে আইনে রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।