ট্রাম্পের এক জেদের কারণে ডুবে গেল ৩৫০ লাখ কোটি টাকা! তবুও কিছুই হাতে এল না, ভারতও ক্ষতির মুখে

ট্রাম্পের এক জেদের কারণে ডুবে গেল ৩৫০ লাখ কোটি টাকা! তবুও কিছুই হাতে এল না, ভারতও ক্ষতির মুখে

আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন থেকেই তিনি জেদ ধরে রেখেছেন যে, বিশ্বের যেসব দেশ আমেরিকান পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক আরোপ করছে, তাদের সবার ওপর তিনি শুল্ক বসাবেন।

এরপর তিনি একে একে চীন, কানাডা, মেক্সিকো এবং ভারতের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। তার এই সিদ্ধান্ত শুধু আমেরিকাই নয়, ভারতসহ পুরো এশিয়ার বাজারের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে চলমান পতনের ফলে বিনিয়োগকারীদের লাখ লাখ কোটি টাকা ডুবে গেছে।

নতুন শুল্ক বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত করেছে
রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন, যা বিশ্বজুড়ে মন্দার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। এই আতঙ্কের ফলে শেয়ারবাজারে ব্যাপক বিক্রির চাপ পড়েছে, যার ফলে গত মাসে S&P 500 সূচক প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩৫০ লাখ কোটি টাকা) ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

সোমবার আমেরিকার শেয়ারবাজারে বড় পতন দেখা গেছে। এই দিন S&P 500 সূচক ২.৭% কমে গেছে, যা এই বছরের সবচেয়ে বড় একদিনের পতন। একই দিনে ন্যাসডাক কম্পোজিট ৪% কমে যায়, যা ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের পর সবচেয়ে বড় একদিনের পতন।

রেকর্ড পতনের ধাক্কা
সোমবার S&P 500 তার ১৯ ফেব্রুয়ারির সর্বোচ্চ স্তরের তুলনায় ৮.৬% নিচে বন্ধ হয়েছে, যার ফলে বাজার মূল্যে ৪ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে এবং এটি ১০% পতনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। টেক কো ম্পা নিগুলোর সূচক ন্যাসডাক বৃহস্পতিবার তার ডিসেম্বরের সর্বোচ্চ স্তরের তুলনায় ১০% এরও বেশি নিচে বন্ধ হয়েছে।

এছাড়া S&P 500-এর প্রযুক্তি খাত ৪.৩% পতন দেখেছে, যেখানে Apple এবং Nvidia উভয়েই প্রায় ৫% কমেছে। Tesla-তে ১৫% বিশাল পতন হয়েছে, যার ফলে এর বাজার মূল্য ১২৫ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১০ লাখ কোটি টাকা) কমে গেছে।

ক্ষতি এখনও থামেনি
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি শেয়ারবাজারের মূল্যমান ঐতিহাসিক নিম্নসীমার দিকে আরও কমে যায়, যেটি ২০১৮-২০১৯ সালে ট্রাম্পের ইউএস-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের সময় দেখা গিয়েছিল, তবে S&P 500 আরও ৫.৫% কমে ৫৩০০-এ পৌঁছতে পারে। যদিও কিছু নিরাপদ খাত তুলনামূলক ভালো পারফর্ম করেছে, যেমন ইউটিলিটিজ সেক্টর দিনে ১% বৃদ্ধি দেখিয়েছে।

নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত আমেরিকান সরকারি বন্ডের চাহিদা বেড়েছে, যার ফলে ১০-বছরের ট্রেজারি ইল্ড প্রায় ৪.২২%-এ নেমে এসেছে।

ভারতও বড় ক্ষতির মুখে
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের ফলে শুধু আমেরিকাই নয়, ভারতও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর মাত্র ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ভারতীয় শেয়ারবাজার প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার (৫০ লাখ কোটি টাকার বেশি) ক্ষতি দেখেছে।

ভারতীয় কো ম্পা নিগুলোর PE অনুমানও ১৬ বছরে প্রথমবারের মতো আমেরিকান বাজার ও কো ম্পা নির তুলনায় নিচে নেমে গেছে। বাজারে এখনও অস্থিরতা বিরাজ করছে এবং পতন অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *