মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে ঘেরাও করলেন, বললেন- আমার হিন্দু ধর্ম রক্ষা করার অধিকার আছে, কিন্তু…

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি নেতা এবং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিতর্কিত মন্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন। মমতা বিজেপির বিরুদ্ধে ‘নকল হিন্দুত্ব’ ছড়ানোর অভিযোগ এনে বলেছেন যে, বিজেপি রাজ্যে সংখ্যালঘুদের অধিকার দমন করছে।
শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি বলেছিলেন যে, যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে, তবে তৃণমূল কংগ্রেসের মুসলিম বিধায়কদের বিধানসভা থেকে বের করে দেওয়া হবে।
বিজেপির ওপর মমতার আক্রমণ
বিধানসভায় বক্তব্য রাখার সময় মমতা বিজেপির আদর্শকে ‘নকল হিন্দুত্ব’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, “আপনারা যে আমদানি করা হিন্দু ধর্ম প্রচার করছেন, তা আমাদের প্রাচীন বেদ বা সাধু-সন্তদের দ্বারা সমর্থিত নয়। আপনারা কীভাবে নাগরিকদের অধিকার অস্বীকার করতে পারেন?”
তিনি আরও বলেন, বিজেপি ধর্মীয় অনুভূতিকে উসকে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে।
‘হিন্দু কার্ড’ খেলার বিরুদ্ধে মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘হিন্দু কার্ড’ খেলার বিরোধিতা করে বলেন যে তিনি প্রকৃত হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করেন, কিন্তু বিজেপির পথ অনুসরণ করেন না। তিনি বলেন, “আমার হিন্দু ধর্ম রক্ষা করার অধিকার আছে, কিন্তু তা আপনার (বিজেপির) পথ অনুসারে হবে না। দয়া করে ‘হিন্দু কার্ড’ খেলা বন্ধ করুন।”
বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যকে বৈষম্যমূলক বলে অভিহিত করেন এবং বলেন যে বিজেপি ধর্মীয় বিভাজন বাড়াচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আপনারা কীভাবে বলতে পারেন যে মুসলিম বিধায়করা বিধানসভায় থাকতে পারবেন না? এটি সংবিধানের বিরুদ্ধে!”
তৃণমূল নেতাদের সতর্কবার্তা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদেরও সংযম বজায় রাখার পরামর্শ দেন এবং বলেন যে দলের অনেক নেতাকে বিতর্কিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, “এটি আমাদের দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এবং আমরা সবার কাছ থেকে সংযম আশা করি।”
ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর জোর
মমতা ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, “আমরা একটি বহুত্ববাদী এবং ধর্মনিরপেক্ষ দেশে বাস করি, এবং প্রত্যেকেরই নিজের ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে।”
বিজেপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
মমতা বিজেপির বিরুদ্ধে বিধানসভায় গোলমাল করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন যে বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে বিধানসভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে এবং প্রতিবাদ স্বরূপ কাগজ ছিঁড়েছে। মমতা বিধায়কদের প্রতি বিধানসভার মর্যাদা বজায় রাখার আহ্বান জানান এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।