পাকিস্তান ট্রেন হাইজ্যাক আপডেট: ১০৪ জনকে উদ্ধার, ১৬ সন্ত্রাসী নিহত, এখনও ২৩ জন আটকে, অভিযান চলছে

পাকিস্তানে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বেলুচ লিবারেশন আর্মি (BLA) কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস (Jaffar Express) ট্রেন হাইজ্যাক করেছে।
সন্ত্রাসীরা যাত্রীদের জিম্মি করে নেয়, যার পর পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
এখন পর্যন্ত ১০৪ জন যাত্রীকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ১৬ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে, তবে এখনও ২৩ জন আটকে আছেন, যাদের উদ্ধারের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কীভাবে হামলা হলো?
জাফর এক্সপ্রেস যখন কোয়েটা থেকে পেশোয়ার যাচ্ছিল, তখন বেলুচিস্তানের কাচ্চি (বোলান) জেলার পিরোকনারি এলাকায় সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়।
প্রথমে, ট্রেনের ট্র্যাকে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, যার ফলে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর, সন্ত্রাসীরা ট্রেনের ওপর প্রচণ্ড গুলিবর্ষণ শুরু করে।
ট্রেনটি একটি সুরঙ্গে থামিয়ে ২১৪ জন যাত্রীকে জিম্মি করা হয়। সন্ত্রাসীরা দাবি করেছে যে তারা ৩০ জন নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যা করেছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান
Geo নিউজ সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত বিশেষ অভিযান শুরু করে এবং সন্ত্রাসীদের ঘিরে ফেলে।
- এখন পর্যন্ত ১০৪ জন যাত্রীকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৮ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী এবং ১৫ জন শিশু রয়েছে।
- ১৬ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে, এবং আরও কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে।
- এখনও ২৩ জন যাত্রী আটকে আছেন এবং তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
- কিছু উদ্ধারকৃত যাত্রীকে কোয়েটা পাঠানো হয়েছে, তবে ট্রেনটি এখনও সুরঙ্গে আটকে রয়েছে।
সন্ত্রাসীদের দাবি ও হুমকি
বেলুচ লিবারেশন আর্মি (BLA) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে এবং তারা জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে কিছু শর্ত রেখেছে:
- সকল বেলুচ রাজনৈতিক বন্দি ও জোরপূর্বক নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে হবে।
- তাদের দাবি না মানলে, সব জিম্মিদের হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
- পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর স্থল হামলা ব্যর্থ করার দাবিও করেছে।
প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
গৃহমন্ত্রী মোহসিন নকভি নিরাপত্তা বাহিনীর সাহসিকতার প্রশংসা করে বলেছেন, সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অভিযানে সহায়তা চেয়েছেন।
বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসবাদ কেন বাড়ছে?
- বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ও খনিজ-সম্পদ সমৃদ্ধ প্রদেশ, তবে স্থানীয়দের অভিযোগ সরকার তাদের সম্পদের শোষণ করছে।
- বেলুচ বিদ্রোহীরা স্বাধীন বেলুচিস্তানের দাবি করছে।
- সম্প্রতি পাকিস্তান ও চীনের বিরুদ্ধে নতুন হামলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
- বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ‘বেলুচ ন্যাশনাল আর্মি’ গঠন করে হামলা আরও বৃদ্ধি করেছে।
- গত কয়েক বছরে বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে, যা পাকিস্তান সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন কী হবে?
পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং বলেছে, শেষ সন্ত্রাসী নিধন না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
- ২৩ জন যাত্রীকে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে।
- বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু হতে পারে।
O