নদী-নালার পাশে বসবাসকারী মানুষদের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি: আইসিএমআর রিপোর্ট

ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বসবাসের জন্য পর্যাপ্ত জমি পাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে। এই সংকটের কারণে অনেক মানুষ নদী ও নালার পাশের জায়গায় বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন মহানগরে, বিশেষ করে রাজধানী দিল্লির মতো শহরে, বহু মানুষ ছোট-বড় নালার ধারে ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন। কিন্তু এই ধরনের জায়গায় বসবাস করা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
ভারতের ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ’ (ICMR)-এর একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে যে নদী ও নালার পাশের এলাকায় বসবাসকারীদের ক্যান্সারের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি। এই গবেষণায় দেখা গেছে, জল ও মাটিতে সিসা, লোহা এবং অ্যালুমিনিয়ামের পরিমাণ বিপজ্জনকভাবে বেশি, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। রাজ্যসভায় উপস্থাপিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, এসব রাসায়নিক উপাদান কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।
সরকার ইতোমধ্যে এই সমস্যার মোকাবিলায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী প্রতাপরাও জাধব জানিয়েছেন যে ১৯টি রাজ্যে বিশেষায়িত ক্যান্সার ইনস্টিটিউট এবং ২০টি তৃতীয় পর্যায়ের ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া, আয়ুষ্মান ভারত-প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার আওতায় ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য বছরে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার আরও জানিয়েছে যে দেশব্যাপী স্বল্প মূল্যে ওষুধ সরবরাহের জন্য ১৫,০০০-এরও বেশি ‘প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জনৌষধি কেন্দ্র’ খোলা হয়েছে, যেখানে ক্যান্সারের জন্য নির্দিষ্ট ৮৭টি ওষুধ পাওয়া যায়।
ভারতে ক্যান্সার প্রতিরোধ ও চিকিৎসার উন্নতির জন্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অফ নন-কোমিউনিকেবল ডিজিজেস’ (NP-NCD) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যার আওতায় ৭৭০টি জেলা এনসিডি ক্লিনিক, ৩৭২টি জেলা ডে-কেয়ার সেন্টার এবং ৬,৪১০টি কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে মূলত ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।