সোনায় মোড়া, মার্বেল খচিত: প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ‘শীশমহল’ নিয়ে বিতর্ক

সোনায় মোড়া, মার্বেল খচিত: প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ‘শীশমহল’ নিয়ে বিতর্ক

দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ‘শীশমহল’ নিয়ে বিতর্কের আগুন এখনও নিভেনি। এবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে অন্ধ্র প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডির বিলাসবহুল প্রাসাদ। বিশাখাপত্তনমের ঋষিকোন্ডা এলাকায় প্রায় ১০ একর জমিতে বিস্তৃত এই মহলটি রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। প্রাসাদটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা, যা পরিবেশ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের মুখে পড়েছে।​

জগনমোহন রেড্ডির এই প্রাসাদটি রাজকীয় স্থাপত্যের উদাহরণ। ইতালীয় মার্বেল মেঝে, সোনার কারুকাজ করা দরজা ও জানালা, মূল্যবান বিদেশি আসবাবপত্র এবং সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন এই মহলটি চারটি ব্লকে বিভক্ত। প্রাসাদ নির্মাণের জন্য পাহাড় কাটা হয়েছে। এছাড়াও, ১০০ কিলোভোল্টের বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, পাকা রাস্তা, স্যুয়ারেজ সিস্টেম এবং স্বতন্ত্র জল সরবরাহ ব্যবস্থাও স্থাপিত হয়েছে।​

এই মহল নিয়ে বিতর্কের মূল কারণ পরিবেশ বিধির লঙ্ঘন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের মে মাসে এই এলাকাকে শুধুমাত্র পর্যটন উন্নয়নের জন্য অনুমোদন দিয়েছিল। তবে অভিযোগ উঠেছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সরকার এটি জগনমোহন রেড্ডির ব্যক্তিগত বাসভবন হিসেবে নির্মাণের পরিকল্পনা করে। বর্তমানে অন্ধ্র প্রদেশে এনডিএ সহযোগী তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, যারা এই প্রাসাদকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন তুলছে। মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর সরকার এটিকে সরকারি তহবিলের অপব্যবহার হিসেবে চিহ্নিত করে তদন্ত শুরু করেছে।​

এই বিতর্কটি দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ‘শীশমহল’ প্রসঙ্গকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তাঁর সরকার সিভিল লাইনস এলাকায় অবস্থিত সরকারি বাসভবনের মেরামত ও সজ্জায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। বিজেপি তখন এটিকে ‘শীশমহল’ বলে সমালোচনা করেছিল, এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও কেজরিওয়ালকে নিশানা করেছিলেন। এখন একই ধরনের বিতর্কে জড়িয়েছেন অন্ধ্র প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি। বিরোধীরা এটিকে জনগণের অর্থের অপচয় বলে অভিহিত করছে, যদিও রেড্ডির দল এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে দেখছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *