আয়ুষ্মান যোজনায় প্রবীণদের বয়স ৬০ বছর ও পরিমাণ ১০ লাখ করার সংসদীয় কমিটির সুপারিশ

নয়াদিল্লি, ১৫ মার্চ (हि.स.) – স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ২০২৫-২৬ সালের জন্য তাদের অনুদান দাবির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। অধ্যাপক রাম গোপাল যাদবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য বীমা যোজনার আওতা আরও বিস্তৃত করার সুপারিশ করেছে।
এর আওতায়, আয়ুষ্মান “বয় বন্দন” কার্ডের জন্য বয়সসীমা ৭০ বছর থেকে কমিয়ে ৬০ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, এই সুযোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তির সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান বাধা হওয়া উচিত নয়।
কমিটি সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে এবি-পিএমজেএওয়াই (AB-PMJAY) বয় বন্দন যোজনার আওতায় ৪.৫ কোটি পরিবার এবং ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সী ৬ কোটি প্রবীণ নাগরিককে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রশংসা করেছে। কমিটি দেখতে পেয়েছে যে আয়ুষ্মান “বয় বন্দন” কার্ড ধারকদের চিকিৎসার জন্য ১,৪৪৩.০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কমিটি মনে করে, সাধারণ মানুষের স্বার্থে এই পরিকল্পনার আওতা আরও বিস্তৃত করা উচিত এবং ৭০ বছরের পরিবর্তে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যেখানে তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বাধা হবে না।
কমিটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরকে এবি-পিএমজেএওয়াই সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার অভিযান চালানোর সুপারিশ করেছে যাতে লক্ষ্যবস্তু উপকারভোগীরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন। পাশাপাশি, কমিটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবার উচ্চ ব্যয়ের কথা মাথায় রেখে, স্বাস্থ্য বীমার পরিমাণ ৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করার পরামর্শ দিয়েছে।
কমিটি আরও লক্ষ্য করেছে যে, অনেক উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি এবং উচ্চতর মাত্রার রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা, যেমন সিটি স্ক্যান (CT), এমআরআই (MRI), নিউক্লিয়ার ইমেজিং (Nuclear Imaging) ইত্যাদি, বর্তমানে এই যোজনার আওতায় অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই, এই পদ্ধতিগুলোকে “অ্যাড-অন” হিসেবে সংযোজনের পরিবর্তে সরাসরি আয়ুষ্মান ভারত-প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার (AB-PMJAY) অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
কমিটি আরও দেখতে পেয়েছে যে, এই যোজনার অধীনে তালিকাভুক্ত হাসপাতালগুলোর বীমা দাবি নিষ্পত্তিতে দেরি হচ্ছে, এবং অনেক রাজ্যে প্যাকেজ মূল্যের যথাযথ সংশোধন করা হয়নি। ফলে, অনেক হাসপাতাল রোগীদের চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করছে, যা অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কমিটি মনে করে, যেসব রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এখনো প্যাকেজ মূল্যের সংশোধন করেনি, তাদের ২০২২ সালে কিছু রাজ্যের দ্বারা সংশোধিত মূল্যের ভিত্তিতে পুনর্বিবেচনা করতে উৎসাহিত করা উচিত।
সিজিএইচএস-এর (CGHS) জন্য সুপারিশ
কমিটি সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট হেলথ স্কিম (CGHS)-এর রেফারেল প্রক্রিয়া আরও সহজ করার সুপারিশ করেছে যাতে অসুস্থ অবস্থায় রোগীদের বারবার ডিসপেনসারিতে যাওয়ার প্রয়োজন না হয় এবং তাদের পরিবারগুলোর উপর চাপ কমে।
কমিটি ৭০ বছর ও তার বেশি বয়সী CGHS পেনশনভোগীদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণের জন্য রেফারেলের প্রয়োজনীয়তা বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে, কমিটি আরও সুপারিশ করেছে যে ৬০ বছর ও তার বেশি বয়সী সকল CGHS পেনশনভোগী যেন রেফারেল ছাড়াই চিকিৎসা নিতে পারেন, যা তাদের জন্য স্বাস্থ্যসেবার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করবে।
এছাড়া, CGHS তালিকাভুক্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী CGHS পেনশনভোগীদের রেফারেল ছাড়াই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত। বর্তমানে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী CGHS পেনশনভোগীরা এই হাসপাতালগুলোর মাধ্যমে ক্যাশলেস চিকিৎসার সুবিধা পেয়ে থাকেন।
এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে আয়ুষ্মান ভারত ও CGHS-এর আওতায় আরও বেশি প্রবীণ নাগরিক উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পেতে সক্ষম হবেন।