পাকিস্তানে লাগাতার হামলার মাঝে ভারতের বড় পদক্ষেপ! ১০ দেশের সঙ্গে পরিকল্পনা করে ঘেরার পরিকল্পনা
”যারা নিজেদের উঠোনে সাপ পোষে, তাদের মনে রাখা উচিত যে, একদিন না একদিন সেই সাপ তাদেরই দংশন করতে পারে।” ২০১১ সালে মার্কিন রাজনীতিক হিলারি ক্লিনটন পাকিস্তানকে এই সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন।
সেই সময় তিনি পাকিস্তানেই ছিলেন। এখন তার বলা কথাই সত্যি প্রমাণিত হচ্ছে। পাকিস্তানে প্রতিদিনই সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে। অর্থাৎ, যেসব সন্ত্রাসীদের পাকিস্তান আশ্রয় দিয়েছিল, তারাই এখন পাকিস্তানকে ক্ষতি করা শুরু করেছে।
গত কয়েক মাসে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এই সপ্তাহেই বেলুচ আর্মি পুরো একটি ট্রেন হাইজ্যাক করেছিল। এরপর মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে ১৯টি হামলা হয়েছে, যেখানে ব্যাপক প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। রবিবার বেলুচিস্তানে সেনাবাহিনীর কনভয়ের ওপর হামলা হয়। পাকিস্তানের দাবি, এই হামলায় ৭ জন নিহত হয়েছে, তবে BLA দাবি করেছে, আত্মঘাতী এই হামলায় ৯০ জন সৈন্য নিহত হয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে ভারতও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বড় পদক্ষেপ নিয়েছে।
ভারতের ১০ দেশের সঙ্গে বৈঠকের উদ্যোগ
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর মতে, সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের হুমকি মোকাবিলার জন্য একটি ব্যাপক কৌশল তৈরি করতে ভারত বুধবার ১০ দেশের সংস্থা আসিয়ান (ASEAN)-এর দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করবে। এই বৈঠকে আসিয়ানের কয়েকজন আলোচনা-সঙ্গীও উপস্থিত থাকবে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আসিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের ‘মিটিং-প্লাস’ (ADMM-Plus) কাঠামোর আওতায় সন্ত্রাসবাদ দমনে বিশেষজ্ঞ কর্মগোষ্ঠীর (EWG) সম্মেলনে নতুন আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কোন কোন দেশ অংশ নেবে?
ADMM-Plus হলো একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আসিয়ানের ১০টি দেশ এবং এর ৮টি আলোচনা-সঙ্গী – ভারত, চীন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া ও আমেরিকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই EWG সম্মেলনের সভাপতিত্ব ভারত ও মালয়েশিয়া যৌথভাবে করবে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, বৈঠকে আসিয়ানের ১০টি সদস্য দেশ, ৮টি আলোচনা-সঙ্গী, তিমোর লেস্টে ও আসিয়ান সচিবালয় অংশ নেবে। এই প্রথমবারের মতো ভারত সন্ত্রাসবিরোধী EWG-র সহ-সভাপতি হবে।
ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং বুধবার সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন। এটি ২০২৪-২০২৭ চক্রের জন্য নির্ধারিত সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের প্রথম বৈঠক হবে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলোচনা মূলত সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের উদীয়মান হুমকির মোকাবিলায় একটি শক্তিশালী ও ব্যাপক কৌশল গঠনের উপর কেন্দ্রীভূত থাকবে।