পাকিস্তান, আফগানিস্তান ঠিক আছে, কিন্তু আমেরিকা কেন ভুটানের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল; জানুন

আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এখন ট্রাম্প ৪৩টি দেশের একটি তালিকা তৈরি করেছেন, যাদের উপর তিনি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছেন। এই পুরো তালিকায় তিনটি বিভাগ রয়েছে।
প্রথম লাল, দ্বিতীয় কমলা এবং তৃতীয় হলুদ। লাল তালিকায় এমন দেশ রয়েছে যেখান থেকে কোনও ব্যক্তি আমেরিকায় প্রবেশ করতে পারবে না। এই তালিকায় আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, ইরান, ইয়েমেন, সোমালিয়া, সুদান এবং সিরিয়ার মতো দেশগুলি রয়েছে, যেখানে অস্থিরতা রয়েছে অথবা আমেরিকার সাথে সম্পর্ক খারাপ। কিন্তু এই তালিকায় একটি দেশও আছে, ভুটান। তালিকায় ভুটানের নাম অন্তর্ভুক্তি অবাক করার মতো। এই কারণেই ভুটানকে বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবুও, কেন ভুটানকে লাল তালিকায় রাখা হচ্ছে? আমাদের জানান…
ট্রাম্প প্রশাসনের সূত্রগুলো বলছে, এই তালিকায় ভুটানকে অন্তর্ভুক্ত করার কিছু কারণ রয়েছে। এই কারণেই ভুটানের লোকেরা প্রায়শই আমেরিকা পৌঁছানোর পর ভিসা নিয়ম লঙ্ঘন করে। ভিসায় উল্লেখিত সময়সীমা পার হওয়ার পরেও তারা প্রায়শই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই থেকে যায়। এ ধরনের পরিস্থিতি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এছাড়াও, অবৈধ পথ দিয়ে আমেরিকায় পৌঁছানো ভুটানিদের সংখ্যাও বেড়েছে। আমেরিকাও এ নিয়ে চিন্তিত। মার্কিন স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগ জানিয়েছে যে গত বছর ৩৭ শতাংশ ভুটানি ভিসা নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। এখন লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর, ভুটানের প্রতিটি ব্যক্তিকে দীর্ঘ তদন্তের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবেই তাদের ভিসা জারি করা হবে এবং অনেক ক্ষেত্রে কোনও কারণ না দেখিয়েই তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে।
শুধু তাই নয়, বর্তমানে আমেরিকায় থাকা ভুটানিদেরও অতিরিক্ত তল্লাশি করা হবে। এই সিদ্ধান্ত বিশেষ করে ভুটানের সেইসব মানুষের জন্য সমস্যা তৈরি করবে যারা পড়াশোনা ইত্যাদির জন্য আমেরিকা যাচ্ছেন। এই সিদ্ধান্ত আমেরিকা এবং ভুটানের মধ্যে সম্পর্ককেও প্রভাবিত করবে, যা সাধারণত ভালো ছিল। ভুটানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি জানিয়েছে যে আমেরিকা তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক।
আসলে, আমেরিকা ১১টি দেশকে লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, সোমালিয়া, সিরিয়া, উত্তর কোরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন এবং সুদানের মতো দেশ। এই দেশগুলিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সন্ত্রাসবাদের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে অথবা গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে, এই দেশগুলিকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রাখা যুক্তিসঙ্গত, কিন্তু ভুটানের বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তটি অবাক করার মতো।