প্রতি যুগে প্রযুক্তি ও মানবতার মধ্যে প্রতিযোগিতা, কেন PM মোদী বললেন- AI শক্তিশালী, কিন্তু ভারত ছাড়া আসাম্পূর্ণ

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত প্রযুক্তি মানুষের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। শুরুতে এ নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা সন্দেহ থেকে যায়। তবে এর ফলে কখনো মানুষের ক্ষতি হয়নি, বরং প্রতিটি যুগে এটি উন্নয়নের ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।
AI আসার ফলে এখন একই ধরনের উদ্বেগ মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই বলেছেন যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) যথেষ্ট শক্তিশালী, কিন্তু এটি কখনোই মানব কল্পনাশক্তির স্থান নিতে পারবে না।
রবিবার, মার্কিন পডকাস্টার লেক্স ফ্রিডম্যানের সঙ্গে এক পডকাস্ট শো চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, প্রকৃত মানবিক বুদ্ধিমত্তা ছাড়া কখনোই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) বিকশিত হতে পারে না বা স্থায়ীভাবে অগ্রগতি অর্জন করতে পারে না।
প্রযুক্তির গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, প্রতিটি যুগে মানবতা ও প্রযুক্তির মধ্যে প্রতিযোগিতার পরিবেশ ছিল। অনেক সময় এটি সংঘর্ষের মতোও মনে হয়েছে। তবে সাধারণত এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন প্রযুক্তি মানব অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে। কিন্তু প্রতিবার যখন প্রযুক্তি এগিয়েছে, মানুষ নিজেকে তার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে এবং সবসময় এক ধাপ এগিয়ে থেকেছে।
মানব-প্রযুক্তির মধ্যে প্রতিযোগিতা
PM মোদী বলেন, AI আসার ফলে মানুষ এখন ভাবতে বাধ্য হচ্ছে, আসলে ‘মানব’ হওয়ার প্রকৃত অর্থ কী? এটাই AI-এর আসল শক্তি। তিনি বলেন, এটি আমাদের কাজের ধরণকেও চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। তবে প্রকৃতপক্ষে, মানব কল্পনাই এর মূল চালিকা শক্তি।
তিনি বলেন, এই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে AI শুধু নতুন জিনিস তৈরি করতে সক্ষম নয়, বরং ভবিষ্যতে এটি আরও বেশি দক্ষ হয়ে উঠবে। তবে তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, কোনো প্রযুক্তিই মানুষের কল্পনাশক্তি এবং সীমাহীন সৃজনশীলতার জায়গা নিতে পারবে না।
PM মোদী AI-কে মূলত এক সহযোগী শক্তি হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে, ভারত ছাড়া AI আসাম্পূর্ণ। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “পুরো বিশ্ব যা-ই করুক, AI ভারত ছাড়া আসাম্পূর্ণ থেকে যাবে। AI-এর বিকাশ মূলত এক যৌথ প্রয়াস, যেখানে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে একে অপরকে সমর্থন করে।”
AI-কে ঘিরে তৈরি হওয়া উদ্বেগের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ভারত শুধু তাত্ত্বিক AI মডেল তৈরি করছে না, বরং এটি খুবই নির্দিষ্ট ব্যবহারিক ক্ষেত্রের জন্য AI-চালিত অ্যাপ্লিকেশনগুলোর উপর সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং সেগুলো বাস্তবায়ন করছে। এর লক্ষ্য হলো নিশ্চিত করা যে গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (GPU)-এর সুবিধা সমাজের প্রতিটি স্তরের জন্য সহজলভ্য হয়।
AI কোনো হুমকি নয়, ভারত ছাড়া আসাম্পূর্ণ
5G-এর উদাহরণ দিয়ে PM মোদী বলেন, “প্রথমদিকে বিশ্ব ভেবেছিল যে ভারত অনেক পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু একবার আমরা শুরু করার পর, আমরা বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম এবং ব্যাপক 5G নেটওয়ার্ক স্থাপনকারী দেশ হয়ে উঠেছি।”
তিনি বলেন, “এটি প্রমাণ করে যে ভারতের রয়েছে বিশাল পরিমাণ প্রতিভার ভাণ্ডার, যা আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এর ব্যাপক বিস্তার নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই একটি অনন্য বাজারভিত্তিক মডেল তৈরি করা হয়েছে। ভারতে এ নিয়ে মানুষের মানসিকতায় একটি বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও ঐতিহাসিক প্রভাব, ঐতিহ্যবাহী সরকারি প্রক্রিয়া, বা শক্তিশালী সহায়ক অবকাঠামোর অভাবের কারণে ভারতকে অনেক সময় অন্যদের তুলনায় পিছিয়ে থাকতে দেখা যায়।