সৈনিক স্কুলে কে ভর্তি হতে পারে, কোন পরীক্ষা দিতে হয়? এই বোর্ড সিলেবাস অনুসরণ করে

দেশে মোট ৩৩টি সৈনিক স্কুল রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা, শারীরিক সুস্থতা এবং উচ্চ স্তরের শিক্ষা প্রদান করা হয়। সম্প্রতি, কেন্দ্রীয় সরকার সারা দেশে ১০০টি নতুন সৈনিক স্কুল খোলার ঘোষণা করেছে, যা আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে এই স্কুলগুলিতে পড়াশোনার সুযোগ দেবে।
সৈনিক স্কুলে ষষ্ঠ এবং নবম শ্রেণীতে ভর্তির জন্য, ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (NTA) দ্বারা পরিচালিত একটি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। অল ইন্ডিয়া সৈনিক স্কুল এন্ট্রান্স পরীক্ষা (AIS) বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয়। এই বছর এই পরীক্ষা ৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
আপনি অথবা আপনার পরিচিত কেউ যদি সৈনিক স্কুলে ভর্তি হতে চান, তাহলে এই সমস্ত তথ্য আপনার জন্য কার্যকর হতে পারে। সৈনিক স্কুলের পড়াশোনা, ভর্তি প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে আমাদের জানান…
সৈনিক স্কুলের প্রবেশিকা পরীক্ষা কোন তারিখে অনুষ্ঠিত হবে? AIS সিটি স্লিপ প্রকাশ করেছে, পরীক্ষার প্যাটার্ন এখানে দেখুন
সৈনিক স্কুলগুলি কোন বোর্ডের সাথে অনুমোদিত?
সৈনিক স্কুলগুলি দেশের বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থিত, কিন্তু সকলেরই একই পাঠ্যক্রম রয়েছে। এই স্কুলগুলিতে পড়াশোনা সিবিএসই বোর্ডের অধীনে পরিচালিত হয়। এর উদ্দেশ্য হল সমস্ত সৈনিক স্কুলে একই স্তরের শিক্ষা প্রদান নিশ্চিত করা। এখানেও, NCERT বই থেকে পড়াশোনা করা হয়।
সৈনিক স্কুলে ভর্তির যোগ্যতা
সৈনিক স্কুল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের জাতীয় প্রতিরক্ষা একাডেমি (এনডিএ) এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে ক্যারিয়ারের জন্য প্রস্তুত করা। ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতার মানদণ্ড নির্ধারিত রয়েছে:
বয়সসীমা:
ষষ্ঠ শ্রেণীর জন্য: শিক্ষার্থীর বয়স ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে হতে হবে।
নবম শ্রেণীর জন্য: শিক্ষার্থীর বয়স ১৩ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
লিঙ্গ: আগে শুধুমাত্র ছেলেদের ভর্তি দেওয়া হত, কিন্তু এখন অনেক সৈনিক স্কুলে মেয়েদেরও ভর্তি দেওয়া হচ্ছে।
নাগরিকত্ব: শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিকরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
শিক্ষাগত যোগ্যতা
ষষ্ঠ শ্রেণীর জন্য: পঞ্চম শ্রেণী পাশ হতে হবে।
নবম শ্রেণীর জন্য: অষ্টম শ্রেণী পাশ হতে হবে।
সৈনিক স্কুলে ভর্তি প্রক্রিয়া
সৈনিক স্কুলে ভর্তি নিম্নলিখিত ধাপে সম্পন্ন হয়:
প্রবেশিকা পরীক্ষা (AIS): এই পরীক্ষা প্রতি বছর NTA দ্বারা পরিচালিত হয়। এতে গণিত, সাধারণ জ্ঞান, ভাষা এবং যৌক্তিক ক্ষমতা (বুদ্ধি) সম্পর্কিত প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়।
মেধা তালিকা: পরীক্ষায় পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করা হয়।
সাক্ষাৎকার এবং মেডিকেল পরীক্ষা: লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার এবং মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়।
চূড়ান্ত নির্বাচন: পরীক্ষা, সাক্ষাৎকার এবং মেডিকেল পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে, চূড়ান্ত মেধা তালিকা প্রস্তুত করা হয় এবং তারপর ভর্তি মঞ্জুর করা হয়।
সৈনিক স্কুলে পড়ার সুবিধা
সৈনিক স্কুলে শিক্ষা কেবল শিক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং এটি শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের উপরও জোর দেয়। কিছু প্রধান সুবিধা নিম্নরূপ:
সামরিক প্রশিক্ষণ: শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা, নেতৃত্ব এবং শারীরিক সুস্থতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যা ভবিষ্যতে তাদের সশস্ত্র বাহিনীতে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
সর্বোত্তম শিক্ষা: সিবিএসই সিলেবাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
এনডিএ প্রস্তুতি: সৈনিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের এনডিএ এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা পরীক্ষায় নির্বাচনের হার খুব ভালো।
ব্যক্তিত্ব বিকাশ: খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং অ্যাডভেঞ্চার কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশে সহায়তা করে।
বৃত্তি এবং সুযোগ-সুবিধা: অনেক রাজ্য সরকার এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করে, যা পড়াশোনার খরচ কমায়।
সৈনিক স্কুলে ক্যারিয়ারের সুযোগ
সৈনিক স্কুলে পড়াশোনা করার পর, শিক্ষার্থীরা এনডিএ, সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীতে ক্যারিয়ার গড়তে পারে। এছাড়াও, তারা সিভিল সার্ভিস, ইঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসা এবং অন্যান্য পেশাগত ক্ষেত্রেও সাফল্য অর্জন করতে পারে।