কানাডার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মার্ক কার্নি ভেঙে দিলেন আমেরিকার আধিপত্যের প্রথা, ফ্রান্সের সঙ্গে মিলে করলেন এই কাজ, ট্রাম্প হতবাক
আমেরিকা ও কানাডার সম্পর্কের ফাটল এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বাণিজ্য যুদ্ধ দিয়ে শুরু হওয়া এই লড়াই এখন কূটনৈতিক সম্পর্ক পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করেই এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। সোমবার, কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি প্রচলিত নিয়ম ভেঙে, দেশের নেতা হিসেবে তার প্রথম বিদেশ সফরে আমেরিকার পরিবর্তে ইউরোপ গিয়েছেন।
আমেরিকার পরিবর্তে ফ্রান্স ও ব্রিটেনে পৌঁছলেন কার্নি
আমেরিকা সফরের পরিবর্তে তিনি ফ্রান্স ও ব্রিটেন গিয়েছেন, যেখানে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে।
প্যারিসে কার্নির জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনা
প্যারিসে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তাকে স্বাগত জানান, এরপর তিনি লন্ডনে পৌঁছান, যেখানে তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ব্রিটেন ও কানাডা উভয়ের রাষ্ট্রপ্রধান রাজা চার্লস তৃতীয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করেন। কার্নির প্রতি ইউরোপীয় নেতাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা ইঙ্গিত দেয় যে, ইউরোপও এখন আর আমেরিকাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে না।
ফরাসি ভাষায় কথা বললেন কার্নি
এলিসি প্রাসাদে যৌথ সংবাদ সম্মেলনের সময়, কার্নি ইংরেজিতে কথা বলতে বলতে হঠাৎ ফরাসি ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন, যার মাধ্যমে তিনি ফ্রান্সের প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশের চেষ্টা করেন। কার্নি ম্যাক্রোঁকে বলেন, ‘কানাডা হলো ইউরোপের বাইরের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইউরোপীয়’ এবং প্রতিশ্রুতি দেন যে কানাডা প্যারিসের জন্য একটি ‘বিশ্বাসযোগ্য, নির্ভরযোগ্য ও শক্তিশালী অংশীদার’ হিসেবে প্রমাণিত হবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ফ্রান্স ও ইউরোপের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ানোর জন্য কানাডার প্রশংসা করেন এবং কার্নি সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা এক বন্ধুকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং আমরা আপনাকে অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করছি।’
কানাডা-আমেরিকা সম্পর্কের অবনতি, নতুন বিকল্প খুঁজছে কানাডা
ইউরোপে কার্নির এই উষ্ণ অভ্যর্থনা এমন সময় এসেছে যখন কানাডা ও আমেরিকার সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এ কারণে কানাডা তার জোটগুলোর নতুন কাঠামো নিয়ে ভাবছে এবং আমেরিকার বাইরে অন্যান্য বিকল্প খুঁজছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের নীতিগত ইউ-টার্ন ও রাশিয়ার প্রতি তার ঝোঁক ইউরোপে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে ইউরোপ এখন ভাবছে, আমেরিকার সঙ্গে তাদের অংশীদারিত্ব কতটা নির্ভরযোগ্য।