PM মোদীর পডকাস্ট দেখে চীন খুশি, কিন্তু চেল পাকিস্থান কেন দুঃখ পেল? পুরনো স্টাইলে আবার কাঁদতে শুরু করল

নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন পডকাস্টার লেক্স ফ্রিডম্যানের সঙ্গে একটি পডকাস্ট করেছেন। এই পডকাস্টে, প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর শৈশব থেকে শুরু করে বিশ্ব রাজনীতি পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চীন ও পাকিস্তানের প্রসঙ্গ – সবকিছু নিয়েই খোলাখুলি কথা বলেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর কথা শুনে চীন পর্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। তারা মোদীর পডকাস্ট নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি জারি করেছে। চীন এমনকি এটাও বলেছে যে, “প্রধানমন্ত্রী মোদীর দৃষ্টিভঙ্গি ভারত-চীন সম্পর্কের এক নতুন উচ্চতা”। তারা দাবি করেছে যে ‘ড্রাগন-হাতি’ বন্ধুত্ব এখন সহজে ভাঙবে না।
কিন্তু একই চীনের চেলা পাকিস্তানের কাছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্য একেবারেই পছন্দ হয়নি। মোদীর কথায় যেন লঙ্কাকাণ্ড বেধেছে পাকিস্তানে। সত্য কথা শুনে ক্ষুব্ধ পাকিস্তান সঙ্গে সঙ্গে মোদীর বক্তব্যের নিন্দা করেছে।
পাকিস্তান কেন রেগে গেল?
আসলে, পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী মোদীর আঞ্চলিক শান্তি নিয়ে করা মন্তব্যের নিন্দা ও প্রত্যাখ্যান করেছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি জারি করে প্রধানমন্ত্রী মোদীর মন্তব্যকে ‘ভ্রান্ত এবং একতরফা’ বলে অভিহিত করেছে। পাকিস্তান সত্য সহ্য করতে পারেনি। মোদী যা কিছু বিশ্বের সামনে বলেছেন, তা পাকিস্তান মেনে নিতে পারেনি এবং পুরনো কৌশল অনুসরণ করেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আবারও কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে এনেছে। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “এই মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং একতরফা। তারা জম্মু-কাশ্মীর সমস্যাকে উপেক্ষা করছে, যা জাতিসংঘ, পাকিস্তান এবং কাশ্মীরিদের প্রতি ভারতের গুরুতর প্রতিশ্রুতির পরেও গত সাত দশক ধরে অমীমাংসিত রয়েছে।”
PM মোদী ঠিক কী বলেছিলেন পাকিস্তান সম্পর্কে?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মোদী ঠিক কী বলেছিলেন? আসলে, পাকিস্তান নিয়ে রবিবার এক জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্টার লেক্স ফ্রিডম্যানের সঙ্গে পডকাস্ট চলাকালীন মোদী এক মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের প্রতিটি প্রচেষ্টার উত্তর এসেছে শত্রুতা ও বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে। তিনি আশা করেন, একদিন পাকিস্তানের নেতৃত্ব বুদ্ধিমান সিদ্ধান্ত নেবে এবং দুই দেশের সম্পর্ক উন্নত হবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেন, তিনি তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, কিন্তু শান্তির প্রচেষ্টার প্রতিদান তিনি বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে পেয়েছেন। মোদীর মতে, পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ শান্তি চায়, কিন্তু তাদের সরকার সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে। তিনি এটাও বলেন যে, ভারত সর্বদাই শান্তির পক্ষে থেকেছে।
PM মোদীর মন্তব্যে চীনের প্রতিক্রিয়া
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, “আমরা ভারত-চীন সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাম্প্রতিক ইতিবাচক মন্তব্য দেখেছি। আমরা এটি প্রশংসা করি। গত বছরের অক্টোবর মাসে রাশিয়ার কাজানে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে যে সফল বৈঠক হয়েছিল, সেটি দুই দেশের সম্পর্ক উন্নতির জন্য নতুন পথ খুলে দিয়েছে।”
চীন আরও বলেছে, “আমরা ইতিবাচক ফলাফল দেখছি। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে, গত ২০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারত ও চীনের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। আমাদের সভ্যতা মানব উন্নতির জন্য নিবেদিত। বিশ্বের দুটি বৃহৎ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে, ভারত ও চীন তাদের উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে একে অপরকে সমর্থন করছে। এটি ২.৮ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের মৌলিক স্বার্থ পূরণ করে।”
চীনের মুখপাত্র আরও যোগ করেছেন, “ভারত ও চীন পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে একে অপরের উন্নতিতে সহায়তা করা উচিত এবং ‘ড্রাগন-হাতির বন্ধুত্ব’ সহজে ভাঙার নয়।”
PM মোদী কী বলেছিলেন চীন নিয়ে?
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “ভারত ও চীন ২০২০ সালে সীমান্তে তৈরি হওয়া উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে। ধীরে ধীরে কিন্তু নিশ্চিতভাবে, বিশ্বাস, উদ্দীপনা এবং শক্তি ফিরে আসবে। নিশ্চিতভাবে এটি কিছুটা সময় নেবে, কারণ এটি গত পাঁচ বছরের ইস্যু। আমরা একসঙ্গে কাজ করছি এবং এটি বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি আরও বলেন, “যেহেতু ২১শ শতক এশিয়ার শতক, আমরা চাই ভারত ও চীন সুস্থ ও স্বাভাবিক প্রতিযোগিতায় যুক্ত হোক। প্রতিযোগিতা কোনো খারাপ বিষয় নয়, তবে এটি কখনোই সংঘর্ষে পরিণত হওয়া উচিত নয়।”