খারাপ ওরাল হাইজিনের নিউরো সিস্টেমের উপর কী প্রভাব পড়ে? বিশেষজ্ঞের মতামত জানুন

খারাপ ওরাল হাইজিনের নিউরো সিস্টেমের উপর কী প্রভাব পড়ে? বিশেষজ্ঞের মতামত জানুন

ওরাল হেলথ আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে ওরাল হেলথ ও নিউরো সমস্যার মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের মুখ, দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য আমাদের মস্তিষ্কের উপর বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলতে পারে।

খারাপ ওরাল হাইজিন, বিশেষত মাড়ির রোগ, আলঝাইমার ও ব্রেন স্ট্রোকের মতো বিভিন্ন নিউরো-সম্পর্কিত সমস্যার কারণ হতে পারে। প্রতি বছর ২০ মার্চ বিশ্ব ওরাল দিবস (World Oral Day) পালিত হয়। এবারের থিম— “A Happy Mouth is… A Happy Mind”। বিশেষজ্ঞদের মতে, মুখ ও মস্তিষ্কের মধ্যে এক বিশেষ যোগসূত্র রয়েছে। আসুন, বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানি।

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

ফর্টিস হাসপাতাল, ফারিদাবাদের পরিচালক ও নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ ড. বিনীত বাঙ্গা জানান, ওরাল হেলথ ও নিউরো হেলথ সম্পর্কে সচেতন হওয়া খুবই জরুরি। মুখের স্বাস্থ্য নিউরোলজিক্যাল সিস্টেমকে প্রভাবিত করতে পারে। আসলে, মুখের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া মস্তিষ্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমাদের মুখে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে, যাদের মধ্যে কিছু ব্যাকটেরিয়া মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

যদি নিয়মিত সঠিকভাবে ব্রাশ ও ফ্লস করা না হয়, তবে মাড়ির রোগ বা পেরিওডোন্টাল সংক্রমণ (Periodontal Disease) হতে পারে। এ ধরনের সংক্রমণে ব্যাকটেরিয়া রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করতে পারে এবং মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে, যা গুরুতর নিউরোলজিক্যাল সমস্যার কারণ হতে পারে।

কোন কোন রোগ হতে পারে?

গবেষণায় দেখা গেছে যে আলঝাইমার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কে মুখের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। এ ছাড়া, অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি স্নায়ু সংক্রান্ত রোগের (Cognitive Disease) জন্যও দায়ী হতে পারে। খারাপ ওরাল হেলথ ব্রেনের প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন বাড়িয়ে দিতে পারে, যা নিউরো সমস্যার অন্যতম কারণ।

মাড়ির প্রদাহ শরীরের অন্যান্য অংশেও ইনফ্লামেশন বাড়াতে পারে, যার মধ্যে মস্তিষ্কও রয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ নিউরো সম্পর্কিত সমস্যাগুলোর ঝুঁকি বাড়াতে পারে, যেমন আলঝাইমার, পারকিনসন্স ডিজিজ এবং স্ট্রোক।

দাঁত ও মস্তিষ্কের সংযোগ

ওরাল হেলথ মস্তিষ্কের উপর আরেকটি উপায়ে প্রভাব ফেলে— তা হলো দাঁতের ক্ষতি। দাঁত পড়ে গেলে খাওয়ার ও কথা বলার সমস্যা হতে পারে, যা আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দিতে পারে এবং সামাজিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। এটি মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

ভালো ওরাল হেলথের জন্য টিপস

  • নিয়মিত ব্রাশ ও ফ্লস করা
  • দাঁতের নিয়মিত পরীক্ষা করানো
  • ওরাল ইনফেকশন প্রতিরোধ করা
  • মুখের প্রদাহ কমানোর জন্য কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করা, যেমন— লবঙ্গ ব্যবহার করা, যা দাঁত ও মাড়িকে মজবুত করে
  • সঠিক ব্রাশিং কৌশল অনুসরণ করা ও উপযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করা
  • কোনো সমস্যা হলে ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া

ওরাল হেলথ ভালো রাখলে শুধুমাত্র মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে না, বরং নিউরো হেলথও সুস্থ থাকে। তাই নিয়মিত ওরাল কেয়ার করা অত্যন্ত জরুরি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *