কর্মজীবী মহিলাদের গর্ভাবস্থায় এই বিষয়গুলিতে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত, অন্যথায় গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিতে পারে।

গর্ভাবস্থার যাত্রা প্রতিটি মহিলার জন্য বিভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে, কিন্তু তার গর্ভে একটি নতুন জীবনের লালন-পালনের অনুভূতি প্রতিটি মহিলার জন্য খুবই বিশেষ। গর্ভাবস্থার ৯ মাসে মহিলাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন ঘটে, যার মধ্যে রয়েছে শারীরিক, মানসিক, হরমোনজনিত এবং মানসিক পরিবর্তন।
গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশুর সাথে আপনার দৈনন্দিন রুটিন এবং অফিসের কাজ পরিচালনা করা কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে মহিলাদের দায়িত্ব দ্বিগুণ হয়ে যায় এবং তাদের স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত। আশা আয়ুর্বেদের পরিচালক এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ চঞ্চল শর্মা এই বিষয়ে বলেন, গর্ভবতী মহিলারা কিছু টিপস অবলম্বন করে তাদের গর্ভাবস্থার যাত্রা আরও সুন্দর করে তুলতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় কর্মজীবী মহিলাদের এই বিষয়গুলি মনে রাখা উচিত:
পুষ্টিকর খাবার খান: গর্ভবতী মহিলা যা খান তা গর্ভের শিশুর বিকাশে সহায়তা করে, তাই বলা হয় যে এই সময়কালে মহিলাদের যতটা সম্ভব পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস বলতে বোঝায় আপনার খাদ্যতালিকায় সুষম পরিমাণে সকল প্রয়োজনীয় পুষ্টির উপস্থিতি। এর জন্য, আপনার খাদ্যতালিকায় তাজা ফল, শাকসবজি, বাদাম, শুকনো ফল, ডাল, দুধ, দই ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করুন। এতে প্রোটিন, ফাইবার, খনিজ পদার্থ ইত্যাদি রয়েছে, যা আপনার এবং আপনার গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশুর সম্পূর্ণ যত্ন নেয়। এটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের অবশ্যই ঘরে রান্না করা, বিশুদ্ধ এবং হালকা খাবার অফিসে নিয়ে যেতে হবে এবং কেবল তা-ই খেতে হবে।
শরীরকে হাইড্রেটেড রাখুন: যখন কোনও মহিলার শরীরে জলর অভাব হয়, তখন শরীর অলস হয়ে যায় এবং আপনি ক্লান্ত বোধ করেন। গর্ভাবস্থায়, মহিলাদের সারা দিনে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল পান করা উচিত। মহিলারা কাজের সময় তাজা ফলের রস, নারকেল জল ইত্যাদি খেতে পারেন। এতে আপনার হজমশক্তি ঠিক থাকবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও থাকবে না।
নিয়মিত স্ট্রেচিং করুন: গর্ভবতী মহিলারা যদি সারাদিন বসে কাজ করেন, তাহলে তারা প্রায়শই পিঠ এবং কোমরের ব্যথায় ভোগেন। এমন পরিস্থিতিতে, আপনার প্রতি আধ ঘন্টা অন্তর ৫ মিনিটের বিরতি নেওয়া উচিত যার মধ্যে আপনি হালকা স্ট্রেচিং বা হাঁটাচলা করতে পারেন। এর পাশাপাশি, আপনার নিয়মিত হালকা ব্যায়ামও করা উচিত।
খুব বেশি চাপ নেবেন না: গর্ভাবস্থায় একজন মহিলা যে মানসিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তা শিশুর উপরও প্রভাব ফেলে। অতএব, গর্ভবতী মহিলাদের খুশি থাকা উচিত এবং খুব বেশি চাপ নেওয়া উচিত নয়। মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য আপনি নিয়মিত ধ্যান, যোগব্যায়াম, একা সময় কাটানো, ডায়েরি লেখা ইত্যাদি করতে পারেন। এতে আপনার মানসিক চাপ কমবে এবং আপনার সন্তানও সকল দিক থেকে বিকশিত হবে।
ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন: গর্ভাবস্থায়, একজন মহিলা প্রতি মাসে তার শরীরে বিভিন্ন ধরণের পরিবর্তন অনুভব করেন, যা খুবই স্বাভাবিক, তবে এই সময়ে, আপনার ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষা করানো উচিত যাতে মা এবং শিশু উভয়ের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানা যায় এবং তাদের যত্ন নেওয়া যায়।