মায়ের অবহেলায় ছেলের সম্পত্তি হার!

বীরভূমের সিউড়ি পুরসভার অরবিন্দপল্লি এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা বিনোদিনী মণ্ডলের জীবন সংগ্রামের এক করুণ কাহিনী উঠে এসেছে। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে তাঁর বড় ছেলে দিলীপ মণ্ডল মায়ের কোনো খোঁজখবর রাখেননি। স্বামীর মৃত্যুর পর বিনোদিনী একা হয়ে পড়েন, কিন্তু ছেলে দিলীপ তাঁর দেখভাল তো দূরের কথা, বরং মায়ের নামে থাকা বাড়ি দখল করে বসবাস শুরু করেন। এই অবস্থায় হতাশ বিনোদিনী প্রশাসনের শরণাপন্ন হন। গত বছরের ১২ জুন তিনি সদর মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
মহকুমাশাসক সুপ্রতীক সিংহের নির্দেশে তদন্ত শুরু হয়। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে এবং সমস্ত তথ্য যাচাইয়ের পর ছেলেকে বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। মহকুমাশাসকের রায়ে বলা হয়, দিলীপ মায়ের সম্পত্তির কোনো অংশ পাবেন না। যদিও দিলীপ এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে জেলাশাসকের কাছে আবেদন করেছেন, তবে প্রশাসন ইতিমধ্যে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, শিগগিরই এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে।
বিনোদিনী মণ্ডল বলেন, ”ছেলেকে মানুষ করতে কষ্ট করেছি, কিন্তু শেষ বয়সে একটু শান্তি চাই।” তাঁর আইনজীবী কমলিকা চট্টোপাধ্যায় মুখোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্তকে একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ”এই ঘটনা প্রতিটি সন্তানকে মনে করিয়ে দেবে, মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব এড়ানো আইনের চোখে অপরাধ।” প্রশাসনের এই কঠোর পদক্ষেপে বিনোদিনী কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন, কিন্তু এই ঘটনা সমাজে বাবা-মায়ের প্রতি সন্তানের দায়িত্ববোধ নিয়ে নতুন করে ভাবনার অবকাশ তৈরি করেছে।