অখিল চন্দ্র সেনের অবদান: এই বাঙালির চিঠিতেই প্রথম শৌচাগার বসল ট্রেনে

নয়া দিল্লি: ট্রেনে ভ্রমণ করতে অনেক যাত্রীই পছন্দ করেন। জানালার ধারে বসে সময় কাটানোর লোভে অনেকে বিমান ছেড়ে ট্রেনকেই বিকল্প হিসেবে বেছে নেন। তবে জানলে অবাক হতে হয়, একসময় দূরপাল্লার ট্রেনেও অনেক সুযোগ-সুবিধা ছিল না। এমনকী বাথরুম পর্যন্ত ছিল না! ব্রিটিশরা সেই সময় এমন কোনও ব্য়বস্থা রাখেননি।
তবে এক ভারতীয়ই প্রথম সেই ধারণার কথা বলেছিলেন। তারপরই তৈরি হয় বাথরুম।
ভারতের প্রথম বাণিজ্যিক রেলযাত্রা শুরু হয় ১৮৫৩ সালে। বম্বে এবং থানের মধ্যে প্রথম ট্রেন চালু হয়। সেটাই ভারতীয় রেলের ইতিহাসের শুরু। সেই সময় ১৪ কোচের যাত্রীবাহী ট্রেন টয়লেট ছাড়াই চলছিল। পাঁচ থেকে ছয় দশক ধরে রেল নেটওয়ার্ক বিস্তার লাভ করে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, অন্ধ্র প্রদেশ, গুজরাট এবং রাজস্থানে। তারপর ট্রেনগুলিতে তৈরি হয় শৌচাগার।
ভারতের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড ডেলহৌসিকে ভারতীয় রেলের জনক বলে অভিহিত করা হয়। আর সেই রেলে যিনি শৌচাগার আনলেন, তিনি হলেন তৎকালীন বাংলার রাষ্ট্রপতি অখিল চন্দ্র সেন।
অখিল চন্দ্র সেন সাহেবগঞ্জ বিভাগের রেলের অফিসে ভাঙা-ভাঙা ইংরেজিতে অভিযোগ জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সালে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভের সময় ট্রেন ভ্রমণের সময় শৌচাগারের অভাবের কারণে যাত্রীদের অসুবিধা এবং অসুবিধার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল।
জানা যায়, একবার ট্রেনে যাত্রার সময় মলত্যাগ না করতে পেরে সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। রীতিমতো পেট ফুলে গিয়েছিল তাঁর। একটি স্টেশনে নেমে খোলা জায়গায় মলত্যাগ করতে যান তিনি। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে মলত্যাগ করতে গিয়ে স্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে দেয়, হাতে বালতি নিয়ে দৌড়েও ট্রেন ধরতে পারেননি তিনি।
এরপরই ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে অখিল চন্দ্র সেন ব্রিটিশ রেল কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি দেয়। সেই চিঠিটি সেই সময়ে ৫০ মাইলেরও বেশি দূরত্বে চলমান নিম্ন-শ্রেণীর যাত্রীবাহী ট্রেনগুলিতে টয়লেট স্থাপনের পথ প্রশস্ত করেছিল। . সুতরাং বলাই যায়, লক্ষ লক্ষ যাত্রী যে আজ নিশ্চিন্তে ট্রেনে যাতায়াত করতে পারছেন, তাঁর পিছনে বড় অবদান ছিল অখিল চন্দ্র সেনের।