২০ হাজার বিদেশী যোদ্ধা: পুতিনের দুশ্চিন্তা, প্রতিদিন ১২০০ রুশ সৈন্যের মৃত্যু!

২০ হাজার বিদেশী যোদ্ধা: পুতিনের দুশ্চিন্তা, প্রতিদিন ১২০০ রুশ সৈন্যের মৃত্যু!

কিয়েভ, ২ এপ্রিল ২০২৫: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তিন বছর পেরিয়েছে, কিন্তু এখন ইউক্রেনীয় সেনারা নয়, ২০ হাজার বিদেশী যোদ্ধাই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মাথাব্যথার বড় কারণ হয়ে উঠেছে। দাবি করা হচ্ছে, এই যোদ্ধারা প্রতিদিন গড়ে ১২০০ রুশ সৈন্যকে হত্যা করছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আবেদনে সাড়া দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা এই যোদ্ধারা এখন যুদ্ধের গতিপথ বদলে দিচ্ছে।

বিদেশী যোদ্ধাদের উত্থান

২০২২-এ রাশিয়ার আক্রমণের পর জেলেনস্কি বিশ্ববাসীর কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, ইউক্রেনে এসে আমাদের সঙ্গে লড়াই করুন।” এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রায় ২০ হাজার বিদেশী—যাদের মধ্যে অভিজ্ঞ সেনা থেকে শুরু করে উৎসাহী স্বেচ্ছাসেবী—ইউক্রেনে যোগ দেন। প্রাথমিকভাবে ৪ হাজারের মতো যোদ্ধা এলেও, সময়ের সাথে সংখ্যা বেড়ে ২০ হাজারে পৌঁছেছে। তাদের মধ্যে অনেকে পশ্চিমা অস্ত্রে দক্ষ এবং যুদ্ধক্ষেত্রে চিকিৎসায় পারদর্শী।

ইউক্রেনীয় সেনা কমান্ডার ওলেক্সি কার্পেনকো বলেন, “এই বিদেশীরা আমাদের শক্তি বাড়িয়েছে। তারা শুধু যুদ্ধই করছে না, আমাদের ভাষা-সংস্কৃতি গ্রহণ করে সত্যিকারের নায়ক হয়ে উঠেছে।”

যুদ্ধে প্রভাব

দাবি অনুযায়ী, এই যোদ্ধারা প্রতিদিন ১২০০ রুশ সৈন্যকে হত্যা করছে। যদিও এই সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি, তবে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যে রাশিয়ার দৈনিক ক্ষয়ক্ষতি ১০০০-১৫০০-এর মধ্যে বলা হয়। বিদেশী যোদ্ধারা ড্রোন, জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র ও গেরিলা কৌশলে পারদর্শী, যা রুশ বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে। বিশেষ করে দোনেৎস্ক ও কুর্স্কে তাদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

ইউক্রেনীয় সামরিক বিশ্লেষক দিমিত্রো স্নেহিরভ বলেন, “এই যোদ্ধারা রাশিয়ার জন্য অপ্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জ। তাদের উপস্থিতি যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছে।”

চ্যালেঞ্জ ও বিতর্ক

সব বিদেশী যোদ্ধা ইউক্রেনের জন্য সমান উপকারী নয়। প্রাথমিক পর্যায়ে অপ্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবীদের আগমনে সেনাবাহিনীর কৌশল ফাঁস হয়েছিল, যা রাশিয়া কাজে লাগিয়েছিল। কেউ কেউ অ্যাডভেঞ্চারের লোভে বা ব্যক্তিগত সমস্যা থেকে পালাতে এসেছিলেন। কিয়েভের এক সেনা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, “কিছু লোক যুদ্ধের বদলে ক্যাফেতে সময় কাটিয়েছে। তারা আমাদের জন্য বোঝা হয়ে উঠেছিল।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *