“৮০ কোটি হলে আওয়াজ বন্ধ হবে: মাওলানার বক্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়”

“৮০ কোটি হলে আওয়াজ বন্ধ হবে: মাওলানার বক্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়”

মাওলানা সাজিদ রশিদীর একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেছেন, “যেদিন আমরা ৮০ কোটি হব, সেদিন সেই আওয়াজ থাকবে না।” এই বক্তব্যে ‘আওয়াজ’ বলতে হিন্দু সম্প্রদায়কে ইঙ্গিত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভিডিওটি X প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যবহারকারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার ঢেউ উঠেছে।

বক্তব্যের মূল সুর

১ মিনিট ৭ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে মাওলানা সাজিদ রশিদী, যিনি AIIA সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বলে পরিচিত, জনসংখ্যা নিয়ে বড় দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “ভারতে মুসলমানরা আর কম নেই। এখানে কমপক্ষে ৪০ কোটি মুসলিম আছে। আজ আদমশুমারি হলে সংখ্যা আরও বাড়বে।” তিনি আরও যোগ করেন, “যেখানে মুসলিমরা বাস করে, সেখানে হিন্দুদের থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। জনসংখ্যার পরিবর্তন ঠেকানো উচিত নয়। আমাদের ৮০ কোটিতে পৌঁছাতে হবে। তাদের ‘আমরা দুজন, আমাদের দুজন’ ধারণা আছে, মুসলমানদের তা নেই।” তাঁর মতে, ৮০ কোটি হলে “সবকিছু ভারসাম্যপূর্ণ হবে।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তাপ

ভিডিওটি অমিতাভ চৌধুরী নামে এক ব্যবহারকারীর হ্যান্ডেল থেকে শেয়ার হওয়ার পর থেকে X-এ তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে। অনেকে মাওলানার বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করলেও, এখানে তা উল্লেখ করা সম্ভব নয়। ব্যবহারকারীরা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবি তুলেছেন এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। একজন লিখেছেন, “এ ধরনের বক্তব্যের জন্য কি কোনও ব্যবস্থা নেই?” আরেকজন প্রশ্ন তুলেছেন, “সরকার কি চুপ থাকবে?”

তথ্যের সীমাবদ্ধতা

ভিডিওটির উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। এটি কখন, কোথায় রেকর্ড করা হয়েছে, তা অজানা। তবে বক্তব্যের বিষয়বস্তু এতটাই স্পর্শকাতর যে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন তৈরি করেছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ১৭.২ কোটি, যা মোট জনসংখ্যার ১৪.২%। মাওলানার দাবি করা ৪০ কোটি বা ভবিষ্যতের ৮০ কোটির কোনও আনুষ্ঠানিক ভিত্তি নেই।

বিশ্লেষণ: সমাজে কী বার্তা?

মাওলানার এই বক্তব্য ধর্মীয় মেরুকরণের আশঙ্কা তৈরি করেছে। জনসংখ্যাকে ‘প্রতিযোগিতা’ হিসেবে উপস্থাপন করা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি হতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক রমেশ সিংহ বলেন, “এ ধরনের মন্তব্য সামাজিক উত্তেজনা বাড়ায়। এটি কেবল আবেগকে উসকে দেয়, কিন্তু বাস্তবে কোনও সমাধান দেয় না।” তিনি মনে করেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জাতীয় স্তরে সংলাপ দরকার, যা ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে পরিবেশ ও সম্পদের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করবে।

প্রতিক্রিয়া ও প্রশ্ন

সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারীদের ক্ষোভের পাশাপাশি সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল নিয়ে আলোচনা আগেও হয়েছে, কিন্তু এখনও তা আইনে পরিণত হয়নি। মাওলানার বক্তব্য কি এই বিতর্ককে নতুন মোড় দেবে? নাকি এটি কেবল সাময়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে থেমে যাবে? সময়ই বলবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *