হিন্দু ধর্মে দেবী লক্ষ্মীকে সম্পদ ও সমৃদ্ধির প্রতীক মানা হয়। সকলেই চান তাঁর আশীর্বাদে ঘরে অর্থের অভাব না হয়। বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী, কিছু সহজ পরিবর্তন আপনার বাড়িতে ইতিবাচক শক্তি বাড়িয়ে দেবী লক্ষ্মীকে আমন্ত্রণ জানাতে পারে। “মা লক্ষ্মী সেখানেই বাস করেন, যেখানে পবিত্রতা ও ইতিবাচকতা থাকে,” বলেন বাস্তু বিশেষজ্ঞ পণ্ডিত রাকেশ শর্মা। কী করবেন? এখানে রইল ১০টি কার্যকর টিপস।

১. হলুদ জলের ছিটে

প্রতিদিন ভোরে ঘর পরিষ্কারের পর জলে হলুদ মিশিয়ে পান পাতা দিয়ে ছিটিয়ে দিন। “এটি নেতিবাচক শক্তি দূর করে ঘরকে পবিত্র করে,” জানান শর্মা। ইতিবাচক পরিবেশে লক্ষ্মীর আগমন ত্বরান্বিত হয়।

২. ধর্মগ্রন্থ পশ্চিমে রাখুন

বাড়ির ধর্মীয় বইগুলো পশ্চিম দিকে রাখুন। বাস্তু মতে, এটি জ্ঞান ও সমৃদ্ধির দেবী সরস্বতী ও লক্ষ্মী উভয়কে আকর্ষণ করে। “একটি শান্ত পরিবেশ তৈরি হয়,” বলেন বাস্তু গবেষক মীনাক্ষী দাস।

৩. ঘি প্রদীপ জ্বালান

পূজাস্থলে সকাল-সন্ধ্যা দুটি ঘি প্রদীপ জ্বালান। একটি দিয়ে আরতি করুন, অন্যটি স্থির রাখুন। ঘণ্টা ও শঙ্খ বাজালে ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি পায়। “এটি দেবীর প্রিয়,” জানান শর্মা।

৪. ঝাড়ুর সঠিক স্থান

ঝাড়ু দরজার কাছে বা রান্নাঘরে রাখবেন না। এটি শুইয়ে লুকিয়ে রাখুন। “ঝাড়ু দাঁড় করালে সম্পদ বেরিয়ে যায়,” বলে বাস্তু ঐতিহ্য। এটি লক্ষ্মীর সন্তুষ্টি বাড়ায়।

৫. প্রকৃতির ছবি

দেয়ালে প্রকৃতি বা শান্তির ছবি টাঙান। “এটি মনকে ইতিবাচক রাখে এবং দেবীকে আকর্ষণ করে,” বলেন দাস। নেতিবাচক ছবি এড়িয়ে চলুন।

৬. পরিচ্ছন্নতা অগ্রাধিকার

ময়লা বা আবর্জনা জমতে দেবেন না। প্রধান দরজায় অশোক গাছ লাগান। “মা লক্ষ্মী পরিচ্ছন্ন ঘরে বেশি থাকেন,” জানান শর্মা। পরিষ্কার ঘর সমৃদ্ধির চাবি।

৭. শ্রী যন্ত্র স্থাপন

শ্রী যন্ত্র পূজার সঙ্গে ঘরে রাখুন। “এটি লক্ষ্মীর শক্তি আকর্ষণ করে এবং আর্থিক স্থিতি মজবুত করে,” বলেন পণ্ডিত অজয় মিশ্র। এটি বাস্তুর শক্তিশালী প্রতীক।

৮. তুলসী গাছের যত্ন

তুলসী গাছ লাগিয়ে সকাল-সন্ধ্যা ঘি প্রদীপ ও ধূপ জ্বালান। “তুলসী লক্ষ্মীর প্রিয়, এটি সম্পদ আনে,” জানান মিশ্র। এটি ঘরে শুভ শক্তি বাড়ায়।

৯. তাজা ফুল ব্যবহার

পূজায় বা ফুলদানিতে শুকনো ফুল রাখবেন না। “তাজা ফুল ইতিবাচকতা ছড়ায়, শুকনো ফুল নেতিবাচকতা আনে,” বলেন দাস। এটি লক্ষ্মীর আনন্দ বাড়ায়।

১০. নারীদের সম্মান

ঘরের কন্যা ও পুত্রবধূকে লক্ষ্মীর রূপ মনে করে সম্মান করুন। “তাদের অপমান করলে লক্ষ্মী দূরে যান,” সতর্ক করেন শর্মা। তাদের সুখে লক্ষ্মী স্থায়ী হন।