“১২৮ বছর পর অলিম্পিকে ক্রিকেট, পাকিস্তানের পথে বাধা!”

১২৮ বছরের দীর্ঘ বিরতির পর ক্রিকেট অলিম্পিকে ফিরছে। ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস (LA) গেমসে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ছয়টি পুরুষ ও ছয়টি মহিলা দল অংশ নেবে বলে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (IOC) নিশ্চিত করেছে। তবে, এই সুখবরের মাঝে পাকিস্তানের জন্য হতাশার ছায়া—বর্তমান টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে সপ্তম স্থানে থাকায় তারা বাদ পড়তে পারে। “ক্রিকেটের অলিম্পিক যাত্রা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা বাড়াবে,” বলেন IOC প্রেসিডেন্ট থমাস বাখ। কীভাবে এটি সম্ভব হলো এবং কারা এগিয়ে? আসুন জানি।
অলিম্পিকে ক্রিকেট: কীভাবে সম্ভব হলো?
২০২৩ সালে মুম্বাইয়ে IOC-র ১৪১তম সেশনে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তি অনুমোদিত হয়। LA28 আয়োজক কমিটির প্রস্তাবে ক্রিকেটের পাশাপাশি সফটবল, ফ্ল্যাগ ফুটবল, ল্যাক্রোস ও স্কোয়াশও যুক্ত হয়েছে। “টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট দ্রুত ও দর্শকপ্রিয়, যা অলিম্পিকের জন্য আদর্শ,” জানান IOC-র ক্রীড়া পরিচালক নিকোলো ক্যাম্প্রিয়ানি। প্রতি লিঙ্গে ৯০ জন ক্রিকেটারের কোটা নির্ধারিত হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রতি দলে ১৫ জন খেলোয়াড় মাঠে নামতে পারবে।
ছয় দল, কঠিন প্রতিযোগিতা
ক্রিকেটে মাত্র ছয়টি দলের জন্য স্থান থাকায় প্রতিযোগিতা তীব্র। যুক্তরাষ্ট্র স্বাগতিক হিসেবে সরাসরি জায়গা পাবে বলে ধারণা। বাকি পাঁচটি দল নির্বাচিত হবে সম্ভবত ICC টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে। বর্তমানে পুরুষদের র্যাঙ্কিংয়ে ভারত শীর্ষে, তারপর অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তান সপ্তম স্থানে থাকায় বাদ পড়ার ঝুঁকিতে। মহিলাদের র্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ভারত শীর্ষে, নিউজিল্যান্ড চতুর্থ, আর পাকিস্তান অষ্টম। “যোগ্যতা প্রক্রিয়া ২০২৫-এ চূড়ান্ত হবে,” জানান ICC চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলে।
ভারত-নিউজিল্যান্ডের শক্ত অবস্থান
ভারতের পুরুষ দল, রোহিত শর্মার নেতৃত্বে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে, এবং নিউজিল্যান্ডের মহিলা দল, সোফি ডিভাইনের নেতৃত্বে ২০২৪-এ চ্যাম্পিয়ন হয়ে, LA28-এ শক্তিশালী প্রতিযোগী হিসেবে প্রবেশ করবে। “অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়ের স্বপ্ন আমাদের প্রেরণা,” বলেন ভারতীয় ক্রিকেটার সূর্যকুমার যাদব। পাকিস্তানের জন্য এটি হতাশার—২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাদের দুর্বল পারফরম্যান্স র্যাঙ্কিংয়ে পতন ঘটিয়েছে।
কোথায় হবে ম্যাচ?
লস অ্যাঞ্জেলেসে ক্রিকেট ম্যাচের ভেন্যু এখনও নির্ধারিত হয়নি। আলোচনা চলছে একটি একক ভেন্যুর উপযোগিতা নিয়ে, যা খরচ কমাবে। “২০২৮-এর কাছাকাছি সময়সূচী ঘোষিত হবে,” জানান LA28-এর এক মুখপাত্র। যুক্তরাষ্ট্রে মেজর লিগ ক্রিকেটের সাফল্য এবং ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজন ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে, যা অলিম্পিকের জন্য ইতিবাচক।
পাকিস্তানের বাদ পড়ার আশঙ্কা
পাকিস্তানের বর্তমান র্যাঙ্কিং তাদের পথে বড় বাধা। “শীর্ষ-৬-এ না থাকলে অলিম্পিকে খেলা কঠিন,” বলেন ক্রীড়া বিশ্লেষক আসিফ খান। ২০২৬ পর্যন্ত তাদের পারফরম্যান্স উন্নত না হলে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সম্ভাবনা হাতছাড়া হবে, যা অলিম্পিকে দর্শক আকর্ষণে বড় ধাক্কা হতে পারে।
বিশ্লেষণ: ক্রিকেটের জন্য নতুন দিগন্ত
১৯০০ সালে প্যারিসে ক্রিকেট শেষবার অলিম্পিকে ছিল। এবার ফিরে আসায় ভারতের মতো ক্রিকেট-প্রধান দেশগুলোর জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে। “এটি ক্রিকেটকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যাবে,” বলেন সাবেক ক্রিকেটার রিকি পন্টিং। তবে, সীমিত দলের কারণে প্রতিযোগিতা তীব্র হবে এবং পাকিস্তানের মতো দলের জন্য চ্যালেঞ্জ বাড়বে।