সোনার দামে ঊর্ধ্বগতি: মহাবীর জয়ন্তীতে কেনাকাটার আগে জানুন আজকের রেট

বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, মহাবীর জয়ন্তীর দিনে সোনা ও রূপার বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা গেছে। সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ২৯৪০ টাকা এবং রূপার দাম প্রতি কেজিতে ২০০০ টাকা বেড়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বুলিয়ন মার্কেটের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ক্যারেট সোনার দাম এখন ৯৩,৫৩০ টাকা এবং রূপার দাম ৯৫,০০০ টাকায় ট্রেন্ড করছে। যারা উৎসব উপলক্ষে সোনা বা রূপা কিনতে চান, তাদের জন্য এই দাম বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
শহরভিত্তিক সোনার দাম: ২২ ও ২৪ ক্যারেট
আজকের বাজারে ২২ ক্যারেট সোনার দাম দিল্লি, জয়পুর ও লখনউতে ৮৫,৭৫০ টাকা প্রতি ১০ গ্রামে স্থির রয়েছে। কলকাতা, মুম্বাই ও হায়দ্রাবাদে এই দাম ৮৫,৬০০ টাকা, যেখানে ভোপাল ও ইন্দোরে ৮২,৯৬০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। অন্যদিকে, ২৪ ক্যারেট সোনার দাম দিল্লিতে ৯৩,৫৩০ টাকা, চেন্নাই ও হায়দ্রাবাদে ৯৩,৩৮০ টাকা এবং ভোপালে ৯০,৫০০ টাকায় পৌঁছেছে। ১৮ ক্যারেট সোনার ক্ষেত্রে দিল্লিতে দাম ৭০,১৬০ টাকা এবং চেন্নাইতে ৭০,৯০০ টাকা।
একজন দিল্লির জুয়েলারি ব্যবসায়ী বলেন, “মহাবীর জয়ন্তীর কারণে চাহিদা বেড়েছে, কিন্তু দাম বৃদ্ধি অনেক ক্রেতাকে দ্বিধায় ফেলেছে।”
রূপার দাম: নতুন উচ্চতা
রূপার বাজারেও উত্তাপ ছড়িয়েছে। দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা ও জয়পুরে ১ কেজি রূপার দাম ৯৫,০০০ টাকা, যেখানে চেন্নাই ও হায়দ্রাবাদে এটি ১,০৪,০০০ টাকায় পৌঁছেছে। ভোপাল ও ইন্দোরে দাম ৯২,৯০০ টাকায় স্থিতিশীল। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, শিল্পে রূপার চাহিদা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার প্রভাব এখানে কাজ করছে।
কেন বাড়ছে দাম?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সোনা ও রূপার দাম বৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম প্রতি আউন্স ২৩৫০ ডলার ছাড়িয়েছে, যা ভারতীয় রুপির দুর্বলতার সঙ্গে মিলে দাম বাড়িয়েছে। এছাড়া, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা সোনাকে ‘নিরাপদ আশ্রয়’ হিসেবে আরও আকর্ষণীয় করেছে। একজন বাজার বিশ্লেষক জানান, “উৎসবের মরশুমে চাহিদা বাড়লেও, দামের এই ঊর্ধ্বগতি সাধারণ ক্রেতার বাজেটে চাপ সৃষ্টি করছে।”
সোনার বিশুদ্ধতা: কীভাবে যাচাই করবেন?
সোনা কেনার আগে বিশুদ্ধতা যাচাই জরুরি। ভারতীয় মান ব্যুরো (BIS) হল মার্ক দিয়ে সোনার বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করে। ২৪ ক্যারেট সোনা ৯৯.৯% খাঁটি (হল মার্ক ৯৯৯), যা গয়নার জন্য ব্যবহার করা যায় না। ২২ ক্যারেটে ৯১.৬% বিশুদ্ধতা (হল মার্ক ৯১৬) থাকে, যেখানে তামা বা রূপার মতো ধাতু মেশানো হয়। ১৮ ক্যারেটের বিশুদ্ধতা ৭৫% (হল মার্ক ৭৫০)। একজন জুয়েলার পরামর্শ দেন, “কেনার সময় BIS সার্টিফিকেট দেখুন, যাতে ভেজালের ঝুঁকি না থাকে।”
জনজীবনে প্রভাব
দাম বৃদ্ধি মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। একজন কলকাতার গৃহিণী বলেন, “গয়না কেনার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু এখন বিনিয়োগের জন্য সোনার কয়েনই ভালো মনে হচ্ছে।” ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, উৎসবের মরশুমেও বিক্রি কমতে পারে।