রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের তিন বছরের যুদ্ধে সৈন্য সংকট ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভয় এবং যুদ্ধের নির্মম বাস্তবতা তরুণদের সেনায় যোগ দিতে নিরুৎসাহিত করছে। ইউক্রেন সরকার মাসিক ২,৯০০ ডলার (প্রায় ২.৪ লক্ষ টাকা), ২০ লক্ষ টাকার ক্যাশ বোনাস এবং সুদমুক্ত গৃহঋণের মতো লোভনীয় প্রস্তাব দিয়েও ১৮-২৪ বছরের তরুণদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে শুরু এই নিয়োগ প্রকল্পে মাত্র ৫০০ জন যোগ দিয়েছেন। জেলেনস্কির সামরিক উপদেষ্টা পাভলো পালিসা বলেন, “এটি প্রাথমিক পর্যায়, আমরা প্রকল্পটি সারাদেশে ছড়িয়ে দেব।”

যুদ্ধের ভয়ে বেশিরভাগ তরুণ নিরাপদ জীবন বেছে নিচ্ছেন। যারা যোগ দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে দেশপ্রেম, ব্যক্তিগত প্রতিশোধ বা গভীর ক্ষতের প্রভাব রয়েছে। ২০ বছরের পাভলো ব্রোশকভ, যিনি নিয়োগ নিয়েছেন, বলেন, “আমার ছয় মাসের মেয়ের জন্য যুদ্ধ শব্দটিও অচেনা থাকুক।” তাঁর ১৮ বছরের স্ত্রী ক্রিস্টিনা বলেন, “পয়সার লোভ আছে, কিন্তু কেউ মরতে চায় না।” প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তরুণরা যুদ্ধের কঠিন বাস্তবতায় ভীত হচ্ছেন। প্রশিক্ষু জাখারি শাতকো বলেন, “টিকটকে সব সহজ মনে হয়, কিন্তু বাস্তবে ভয়ঙ্কর।”

ইউক্রেনের সেনায় গড় সৈনিকের বয়স ৪৫ বছর, তাই তরুণদের মোর্চায় আনা জরুরি। কিন্তু প্রশিক্ষক ওলেক্সান্ডার মোরোজ বলেন, “পয়সায় নিয়োগ হতে পারে, কিন্তু যুদ্ধ জিততে শুধু টাকা যথেষ্ট নয়।” ১৮ বছরের ইউরি বোব্রিশেভ, যিনি প্রথম নিয়োগ নেন, তাঁর ভাই যুদ্ধে নিহত হন। তিনি বলেন, “অনেক মৃতদেহ দেখেছি।” পুতিনের আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনের এই সংকট তরুণদের ভয় এবং দেশপ্রেমের মধ্যে দোলাচলকে প্রতিফলিত করে।