কালবৈশাখীর ক্ষত, আরামবাগে বিদ্যুৎবিভ্রাট ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

আরামবাগ, ২৮ এপ্রিল ২০২৫: শনিবার রাতে কালবৈশাখীর প্রবল তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে আরামবাগ মহকুমা। মাটির বাড়ির দেওয়াল ধসে ৭৫ বছরের বৃদ্ধা কমলা ছাতির মৃত্যু হয়েছে। তাঁর দুই ছেলে গুরুতর জখম হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজনকে বর্ধমান মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছে। পরিবারের সদস্য শিউলি মালিক বলেন, “ঝড়ের মধ্যে বাবা ও কাকা ঠাকুমাকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন। হঠাৎ বাড়িটা ধসে পড়ে তিনজনই চাপা পড়েন।” আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে গাছ ভেঙে একটি গাড়ি দুমড়ে যায়, যেখানে শিশুসহ চারজন ছিলেন। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও এক মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঝড়ে ২৫০টির বেশি বিদ্যুৎ খুঁটি উপড়ে গিয়ে মহকুমাজুড়ে বিদ্যুৎবিভ্রাট দেখা দিয়েছে। খানাকুল ও আরামবাগের কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক আধিকারিক জানান, “একাধিক ট্রান্সফর্মার ক্ষতিগ্রস্ত। দ্রুত মেরামতির কাজ চলছে।” গ্রামের বাসিন্দা দিব্যেন্দু ঘোষ বলেন, “রবিবার দুপুরেও বিদ্যুৎ নেই। পানীয় জল, মোবাইল চার্জ নিয়ে সমস্যায় পড়েছি।” ঝড়ে রাস্তায় গাছ পড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। খানাকুলের রাজা রামমোহন রায় মহাবিদ্যালয়ের ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্সের নির্মাণাধীন টিনের শেড ভেঙে পড়ে।
রবিবার সকালে পঞ্চায়েত প্রধান পার্থ হাজারি কমলা ছাতির পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, “ঝড়ে পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জখমদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” পিএইচই গোঘাট ও খানাকুলে জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়েছে। কৃষি দপ্তর বোরো ধানের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখছে। আরামবাগ শহরে রাতে বিদ্যুৎ ফিরলেও গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎবিভ্রাট ও ক্ষয়ক্ষতির জেরে বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়েছেন।