ভারত সরকার জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক বোর্ড (এনএসএবি) পুনর্গঠন করেছে, এবং প্রাক্তন রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র) প্রধান আলোক জোশীকে এর চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে। ২২ এপ্রিল পাহলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সাত সদস্যের এই বোর্ডে সামরিক, পুলিশ এবং কূটনৈতিক ক্ষেত্রের অভিজ্ঞ প্রাক্তন কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। “এই পুনর্গঠন জাতীয় নিরাপত্তার কৌশলকে নতুন দিশা দেবে,” বলেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রাহুল মেহতা।

বোর্ডে সামরিক ক্ষেত্র থেকে প্রাক্তন পশ্চিমী বিমান কমান্ডার এয়ার মার্শাল পি.এম. সিনহা, প্রাক্তন দক্ষিণী সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ.কে. সিং এবং রিয়ার অ্যাডমিরাল মন্টি খান্না নিযুক্ত হয়েছেন। ভারতীয় পুলিশ সার্ভিসের (আইপিএস) প্রাক্তন কর্মকর্তা রাজীব রঞ্জন বর্মা ও মনমোহন সিং এবং ভারতীয় বিদেশ সার্ভিসের (আইএফএস) প্রাক্তন কর্মকর্তা বি. ভেঙ্কটেশ বর্মা বোর্ডের অন্যান্য সদস্য। এনএসএবি জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদকে দীর্ঘমেয়াদি বিশ্লেষণ ও নীতিগত সুপারিশ প্রদান করে, যা সাইবার নিরাপত্তা থেকে সন্ত্রাসবিরোধী কৌশল পর্যন্ত বিস্তৃত। “বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা বোর্ডের কার্যকারিতা বাড়াবে,” বলেন প্রাক্তন আইএফএস কর্মকর্তা শ্যামলা রায়।

২০১৮ সালের পর এই বোর্ডে প্রথম বড় পরিবর্তন এসেছে। পাহলগাম হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৩০ এপ্রিল সকাল ১১টা থেকে তিন ঘণ্টা ধরে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক পরিচালনা করেন, যার মধ্যে ছিল ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (সিসিএস), সিসিপিএ, সিসিইএ এবং কেন্দ্রীয় সচিবদের বৈঠক। রক্ষা, বিদেশ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক আলোচনাও হয়। “এই বৈঠকগুলো হামলার জবাবে কঠোর কৌশল প্রণয়নের ইঙ্গিত দেয়,” বলেন এক সরকারি সূত্র।

আলোক জোশীর নেতৃত্বে এনএসএবি পাকিস্তান ও চীনের ক্রমবর্ধমান হুমকি, সন্ত্রাসবাদ এবং সাইবার হামলার মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই পুনর্গঠন ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। পাহলগামের ঘটনা এবং ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে এই পদক্ষেপ একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করে।