কালবৈশাখীর দাপটে কলকাতা-হাওড়ায় গাছ পড়ে মৃত্যু, রেল-সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত

কালবৈশাখীর দাপটে কলকাতা-হাওড়ায় গাছ পড়ে মৃত্যু, রেল-সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত

পশ্চিমবঙ্গে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডব জনজীবন বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। হাওড়া, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা ও পশ্চিম মেদিনীপুরে তীব্র ঝড় ও বৃষ্টির কারণে গাছ পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে এবং গাছ পড়ে রেল যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে, যার জেরে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন। কলকাতার সূর্যসেন স্ট্রিটে একটি গাছ গাড়ির উপর পড়ে, আর নিউ টাউনে টেকনিক্যাল ভবনের পাশের রাস্তায় গাছ পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। “ঝড়ের তীব্রতা এতটাই ছিল যে কয়েক মিনিটের মধ্যে রাস্তাগুলো অচল হয়ে পড়ে,” বলেন স্থানীয় বাসিন্দা রাহুল মণ্ডল।

বেহালার ইউনিট পার্কে বিদ্যুতের লাইনের উপর গাছ পড়ায় ৪৫ বছরের মীনা ঘোষ গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। একই এলাকায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়। বারাসাতের ইন্দিরা কলোনিতে গাছ ভেঙে বাড়ির উপর পড়ায় ৩০ বছরের গোবিন্দ বৈরাগী প্রাণ হারান। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতে বজ্রপাতে ৭৩ বছরের রাঠু মাহাতোর মৃত্যু হয়, এবং তাঁর স্ত্রী ভারতী মাহাতো আহত হন। কলকাতার থানথানিয়া, বিধান সরণি, টপসিয়া, স্ট্র্যান্ড রোডে জলজটের কারণে যান চলাচল ব্যাহত হয়। “এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে জনসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ,” বলেন কলকাতা পুরসভার এক কর্মকর্তা।

রেল পরিষেবাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মধ্যমগ্রাম ও বিরাটির মাঝে গাছের ডাল ওভারহেড তারে পড়ায় সিয়ালদহ শাখায় রেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় নৈহাটি লোকাল লাইনে গাছ পড়ায় প্রায় এক ঘণ্টা রেল চলাচল ব্যাহত হয়। বনগাঁ শাখা এবং প্রিন্সেপ ঘাট-বিবাদী বাগ স্টেশনের মাঝেও গাছ পড়ে ট্রলিবাস আটকে যায়। রেলকর্মীদের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও রাত পর্যন্ত পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। “আমরা দ্রুত গাছ সরিয়ে লাইন মেরামত করেছি, তবে যাত্রীদের অসুবিধার জন্য দুঃখিত,” বলেন পূর্ব রেলের এক মুখপাত্র। এই ঝড় কৃষকদের ফসলের ক্ষতি এবং দুর্বল কাঠামোর ধ্বংসের আশঙ্কা বাড়িয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *