রাশিয়ার ৯ মে ভিক্ট্রি ডে উদযাপনকে কেন্দ্র করে বিশ্বের নজর মস্কোর দিকে। ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের উত্তেজনার মধ্যে এই অনুষ্ঠান নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার তীব্র হুঁশিয়ারি জারি করেছে। জেলেনস্কি বলেছেন, এই পরেডে অংশ নেওয়া বিশ্ব নেতাদের নিরাপত্তার কোনো গ্যারান্টি ইউক্রেন দেবে না। এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে হইচই ফেলেছে। ইউক্রেনের গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, এটি কেবল রাজনৈতিক বার্তা নয়, বরং সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই ভিক্ট্রি ডে পরেডকে বিশ্ব মঞ্চে শক্তি প্রদর্শনের উপলক্ষ হিসেবে ব্যবহার করতে চান। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-সহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন। ভারত থেকেও একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণের কথা নিশ্চিত হয়েছে, যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে উপস্থিত থাকবেন কিনা, তা নিয়ে এখনও সরকারী ঘোষণা আসেনি। জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেন, “এই যুদ্ধের মধ্যে পরেডে যোগ দেওয়া যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশের সমতুল্য। কোনো হামলা হলে আমাদের দায়ী করা যাবে না।”

ইউক্রেনের এই হুঁশিয়ারি এমন সময়ে এলো, যখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা বেড়েছে, বিশেষ করে সামরিক ঘাঁটি ও সরকারী ভবনগুলোকে লক্ষ্য করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি ইউক্রেনের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের একটি কৌশল, যার উদ্দেশ্য রাশিয়ার আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা এবং পুতিনের শক্তির প্রতীক হিসেবে এই পরেডকে বিশ্ব নেতাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করা। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক দিমিত্রি কোজলভ বলেন, “ইউক্রেন চায় বিশ্ব নেতারা এই অনুষ্ঠানে অংশ না নিন, যাতে পুতিনের কূটনৈতিক জয় ছোট হয়।”

এই পরিস্থিতিতে ভারতসহ অন্যান্য দেশ কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা নিয়ে সাসপেন্স রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্ক থাকলেও, ইউক্রেনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা এবং পশ্চিমী দেশগুলোর নজর ভারতের ভূমিকার উপর রয়েছে। ভারতের এক কূটনৈতিক সূত্র জানায়, “এটি ভারতের জন্য কূটনৈতিক ভারসাম্যের প্রশ্ন।” ভিক্ট্রি ডে পরেডে অংশগ্রহণ নিয়ে আগামী দিনে বড় সিদ্ধান্ত আসতে পারে, যা বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন মোড় আনবে।