মেডিকেল কলেজ হাতিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত, হোয়াটসঅ্যাপে তিন তলাক দিল স্বামী

গাজীপুর কোতোয়ালি এলাকার এক তরুণীর জীবনে সুখের স্বপ্ন ভেঙে গেছে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো তিন তলাকের বার্তায়। ২০০৭ সালে মুসলিম রীতি-রিওয়াজে কানপুরে তার বিয়ে হয়। বিয়েতে কোটি টাকা খরচের পর তরুণী শ্বশুরবাড়ি যায়। কিন্তু কয়েক মাস পর শ্বশুরবাড়ির লোক তাকে তিরস্কার শুরু করে। তারা বলে, “তোমার বাবা মেডিকেল শিক্ষার ব্যবসায়ী, তিনি এখানে একটি মেডিকেল কলেজ খুলে দিন।” বাবা মেয়ের সুখের জন্য কোটি টাকা বিনিয়োগ করে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং শাশুড়ি ও জা-কে প্রবন্ধন কমিটিতে রাখেন। মেডিকেল কলেজের প্রবন্ধ নির্দেশক করা হয় তরুণীর স্বামীকে, যিনি মার্চেন্ট নেভিতে ক্যাপ্টেন।
কিন্তু শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্য ছিল মেডিকেল কলেজ হাতিয়ে নেওয়া। এই সময়ে তরুণীর দুটি সন্তানও হয়। শাশুড়ি ও জা মিলে জালিয়াতির মাধ্যমে জা-কে কলেজের কোষাধ্যক্ষ বানিয়ে আর্থিক অনিয়ম শুরু করেন। তরুণী এর প্রতিবাদ করলে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তাকে মারধর করে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। স্বামী শরিয়তের নোটিশ পাঠিয়ে তাকে আর রাখবেন না বলে জানান। এরপর ২০২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি, সবাই যখন বাড়িতে আনন্দে কথা বলছিল, তরুণীর মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপে ‘তলাক-তলাক-তলাক’ বার্তা আসে। কিছুক্ষণ পর স্বামী ফোনে তলাকের কথা পুনরায় বলেন এবং রেজিস্টার ডাকে তিন তলাকের নোটিশ পাঠান।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী প্রথমে স্বামীকে নোটিশ পাঠান। কোনো জবাব না পেয়ে তিনি কোতোয়ালি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে স্বামী, জা ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে দহেজ নির্যাতন, মারধর এবং মুসলিম মহিলা বিবাহ অধিকার সুরক্ষা আইন ২০১৯-এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। “এই ঘটনা আমাদের সমাজে নারীদের প্রতি অবিচারের একটি বড় উদাহরণ,” বলেন স্থানীয় সমাজকর্মী রুমানা খান।