মেক্সিকোর সার্বভৌমত্ব বিক্রি নয়, ট্রাম্পের সেনা পাঠানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শিনবাউম শনিবার ঘোষণা করেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাদক পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তার জন্য মেক্সিকোতে মার্কিন সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি তা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। পূর্ব মেক্সিকোতে সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া তার বক্তৃতায় তিনি বলেন, “সার্বভৌমত্ব বিক্রির জন্য নয়। সার্বভৌমত্বকে ভালোবাসা হয়, তার রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।” তার এই মন্তব্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছে, যেখানে গত মাসে ট্রাম্পের সঙ্গে তার উত্তপ্ত ফোনালাপের কথা উল্লেখ করা হয়, যেখানে ট্রাম্প মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মার্কিন সেনার বড় ভূমিকার জন্য চাপ দিয়েছিলেন।
শিনবাউম জানান, ট্রাম্প তাকে বলেছিলেন, “মাদক পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা কীভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি? আমার প্রস্তাব, মার্কিন সেনা এসে আপনাদের সহায়তা করুক।” তিনি দৃঢ়ভাবে জবাব দেন, “না, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি, কিন্তু আপনি আপনার এলাকায়, আমরা আমাদের এলাকায়।” সমর্থকদের করতালির মধ্যে তিনি স্পষ্ট করেন, “মেক্সিকোর মাটিতে মার্কিন সেনার উপস্থিতি আমরা কখনোই মেনে নেব না।” হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
জানুয়ারিতে ট্রাম্প অভিবাসন রোধে সেনার ভূমিকা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে মেক্সিকোর সঙ্গে মার্কিন দক্ষিণ সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মার্কিন নর্দান কমান্ড সীমান্তে সৈন্য সংখ্যা বাড়িয়েছে এবং ফেন্টানাইল পাচার রোধে নজরদারি জোরদার করেছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারকারী একাধিক গ্যাং ও কার্টেলকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেন, তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে আরও সম্পদ বরাদ্দ করেন।
শিনবাউমের কঠোর অবস্থান ইঙ্গিত দেয়, অভিবাসন ও বাণিজ্যে কয়েক মাসের সহযোগিতার পর মার্কিন একতরফা সামরিক হস্তক্ষেপের চাপ তাকে ও ট্রাম্পকে সংঘাতের পথে নিয়ে যেতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই উত্তেজনা দুই দেশের সম্পর্কের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে মাদক পাচার ও অভিবাসন নিয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্রে।