বহরাইচে ৮০০ বছরের ঐতিহ্য ভাঙল, সৈয়দ সালার মসূদ গাজি দরগাহ মেলা বাতিল

উত্তর প্রদেশের বহরাইচে সৈয়দ সালার মসূদ গাজি দরগাহে এই বছর জেঠ মেলা অনুষ্ঠিত হবে না, যা গত ৮০০ বছর ধরে প্রতি বছর পালিত হয়ে আসছে। জেলা প্রশাসন এবার মেলার জন্য অনুমতি প্রদান করেনি। সিটি ম্যাজিস্ট্রেট শালিনী প্রভাকর এবং সিও সদর পাহুপ সিং যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দরগাহ ব্যবস্থাপনা কমিটি মেলার আয়োজনের জন্য আবেদন করেছিল, কিন্তু কোনও কর্মকর্তা এটির অনুমোদন দেননি। “বর্তমান পরিস্থিতি এবং আইন-শৃঙ্খলার দৃষ্টিকোণ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে,” বলেছেন শালিনী প্রভাকর।
এই সিদ্ধান্তের পিছনে সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা, ওয়াকফ বোর্ড সংশোধন বিল নিয়ে বিক্ষোভ এবং সম্ভলে সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রভাব রয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, মেলায় প্রতি বছর পাঁচ লাখের বেশি হিন্দু-মুসলিম তীর্থযাত্রী সমাগম করেন, যা আইন-শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। এছাড়া, সম্ভলসহ উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু হিন্দু সংগঠন এই মেলার বিরোধিতা করে আসছিল। তারা সৈয়দ সালার মসূদ গাজিকে, যিনি মাহমুদ গজনবীর ভাগ্নে ছিলেন, আক্রমণকারী হিসেবে উল্লেখ করে মেলা বন্ধের দাবি জানিয়েছিল।
১৫ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত বহরাইচে এই মেলা অনুষ্ঠিত হতো। স্থানীয় গোয়েন্দা ইউনিট (এলআইইউ) জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং দেবীপাটন কমিশনারকে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল, যার ভিত্তিতে মেলার অনুমতি বাতিল করা হয়। সিটি ম্যাজিস্ট্রেট জানান, ১৫ এপ্রিল মেলা কমিটির সভাপতি বকাউল্লা মেলার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এএসপি সিটি রামানন্দ কুশওয়াহা, এসডিএম সদর পূজা চৌধুরীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা আইন-শৃঙ্খলার কারণে এটি অনুমোদন করেননি। সিও সিটি পাহুপ সিং বলেন, “পহেলগাম হামলা, ওয়াকফ বিল নিয়ে বিতর্ক এবং সম্ভলের সহিংসতার প্রেক্ষাপটে জনরোষের আশঙ্কায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” মেলা বাতিলের সিদ্ধান্তে স্থানীয় সংগঠনগুলোর দাবিও প্রভাব ফেলেছে, যারা এটিকে ‘ভুল ঐতিহ্য’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।