মাইগ্রেনের প্রাথমিক লক্ষণ কী? কারা এই রোগের ঝুঁকিতে বেশি?

মাইগ্রেন একটি তীব্র মাথাব্যথা, যা রোগীদের জন্য অসহনীয় হয়ে ওঠে এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায়। এটি সাধারণত মাথার একপাশে ধড়ফড়ানি দিয়ে ব্যথা হিসেবে প্রকাশ পায়, যা কখনও কখনও দুই পাশে ছড়িয়ে পড়ে। মাইগ্রেনের কারণে মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং এমনকি ডিপ্রেশনও হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা অতিরিক্ত তনাবে থাকেন, তাদের মাইগ্রেনের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। “তনাব এবং জীবনযাত্রার অনিয়ম মাইগ্রেনের প্রধান ট্রিগার,” বলেছেন নিউরোলজিস্ট ডা. অরুণ শর্মা।
মাইগ্রেনের লক্ষণ সাধারণত চারটি পর্যায়ে বিভক্ত: প্রোড্রোম, আউরা (ওরা), মাথাব্যথা এবং পোস্টড্রোম। প্রোড্রোম পর্যায়ে, মাথাব্যথা শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে থেকে উত্তেজনা, অনিদ্রা বা বিরক্তি দেখা দেয়। আউরা পর্যায়ে স্পর্শের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়ে, কথা বলতে বা মনোযোগ দিতে সমস্যা হয়। এরপর মাথাব্যথা শুরু হয়, যা ধড়ফড়ানির সঙ্গে ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মাইগ্রেনের কারণগুলির মধ্যে জিনগত প্রভাব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যাদের পরিবারে এই সমস্যা রয়েছে, তাদের ঝুঁকি বেশি। এছাড়া, তীব্র আলো, উচ্চ শব্দ, তীক্ষ্ণ গন্ধ, অ্যালকোহল, ঘুমের অভাব, হরমোনের পরিবর্তন এবং আবহাওয়ার পরিবর্তনও মাইগ্রেনের ট্রিগার হতে পারে।
মাইগ্রেনের কোনও স্থায়ী চিকিৎসা এখনও নেই, তবে ওষুধের মাধ্যমে ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, ট্রিগারগুলি চিহ্নিত করে এড়িয়ে চললে মাইগ্রেন অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তনাব নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত ঘুম, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং হাইড্রেশন মাইগ্রেনের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। “জীবনযাত্রায় ছোট পরিবর্তন মাইগ্রেনের তীব্রতা অনেক কমিয়ে দিতে পারে,” বলেছেন ডা. শর্মা। মাইগ্রেনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। এই সমস্যা যাদের আছে, তাদের ধৈর্য এবং সচেতনতার সঙ্গে এটি মোকাবিলা করতে হবে।