সিন্ধু জল চুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের হুমকি, ভারতের পদক্ষেপে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা

ইসলামাবাদ: পহেলগামে ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত সিন্ধু জল চুক্তি (আইডব্লিউটি) স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে, যা পাকিস্তানের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতকে পরমাণু অস্ত্রের হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “পাকিস্তান একটি পরমাণু শক্তিসম্পন্ন দেশ। ভারত যদি জল বন্ধ করে, আমাদের কাছে সব ধরনের বিকল্প রয়েছে। জল আমাদের অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য, আর আমরা কঠোর জবাব দেব।” তিনি আরও দাবি করেন, সিন্ধু জল চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত করা যায় না এবং ভারতের অভিযোগগুলো “ভিত্তিহীন”।
তারার দাবি, পহেলগাম হামলায় পাকিস্তানের কোনও ভূমিকা নেই, এবং তিনি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “পশ্চিমা গণমাধ্যমও বলেছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ নেই। আমরা যদি জড়িত থাকতাম, তাহলে কেন তদন্তের দাবি করতাম?” তিনি ভারতের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে বলেন, “ভারত মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাদের উপর হামলা চালাচ্ছে।” কাশ্মীর প্রসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, “ভারতের নয় লাখ সেনা কাশ্মীরে মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। আমরা জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী কাশ্মীরিদের রাজনৈতিক ও আর্থিক সমর্থন অব্যাহত রাখব।”
পাকিস্তানের এই হুমকি ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তির স্থগিতকরণের পর এসেছে, যা পাকিস্তানের ৮০% কৃষি এবং এক-তৃতীয়াংশ জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভারত ইতিমধ্যে চেনাব নদীর উপর বাগলিহার বাঁধ এবং ঝিলমের কিশনগঙ্গা বাঁধে জল নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে। পাক মন্ত্রী তারার বলেন, “ভারতের জল বন্ধ করার ক্ষমতা নেই, কিন্তু তারা চেষ্টা করলে আমরা পূর্ণ শক্তি দিয়ে মোকাবিলা করব।” তিনি পাকিস্তানের নিয়মিত মিসাইল পরীক্ষণের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমরা শান্তিতে বিশ্বাসী, কিন্তু আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী।” পাকিস্তানের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টোও বলেছেন, “সিন্ধুতে জল না থাকলে র রক্ত বইবে।” এই হুমকি দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।