পাহলগাম হামলার পর ভারত-পাক উত্তেজনা চরমে, পাকিস্তানের ‘যুদ্ধ’ ঘোষণার প্রস্তাব

নয়াদিল্লি, ৬ মে ২০২৫: পাহলগামে ২৬ জনের প্রাণহানির সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চরম উত্তেজনার মুখে। পাকিস্তানের সংসদে পাস হওয়া একটি প্রস্তাব এই উত্তেজনাকে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। প্রস্তাবে ভারতের জল বন্ধের পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের কাজ’ (Act of War) হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে এবং পাহলগাম হামলায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগের নিন্দা করা হয়েছে। পাকিস্তানের এই প্রস্তাব বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি করলেও, ভারত অটল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছেন, “পাহলগামের দোষীদের তাদের কল্পনার চেয়েও কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।”
ভারত পাঞ্জাব থেকে প্রবাহিত ঝিলম ও চেনাব নদীর জল বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, পাকিস্তানের সিয়ালকোটে ঝিলম নদীর জল প্রায় শুকিয়ে গেছে, যা পাকিস্তানের কৃষিক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এই পদক্ষেপ পাকিস্তানকে জল ও খাদ্য সংকটের মুখে ঠেলে দিতে পারে। পাকিস্তানের সংসদীয় প্রস্তাবে ভারতের এই কাজকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন’ বলা হয়েছে, তবে ভারত পাকিস্তানের হুমকিতে পিছু হটছে না। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “আমরা জাতিসংঘে ভারতের আগ্রাসী পদক্ষেপের বিষয়টি তুলব।”
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে (UNSC) ৫ মে বন্ধ দরজার বৈঠকে এই উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “নাগরিকদের লক্ষ্য করা অগ্রহণযোগ্য। দোষীদের আইনি ও ন্যায়সঙ্গতভাবে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।” তিনি ভারত ও পাকিস্তানকে সর্বোচ্চ সংযম ও সামরিক সংঘাত এড়ানোর আহ্বান জানান। তবে, বৈঠকে ভারতের জল বন্ধের পদক্ষেপের নিন্দা করেনি কোনো দেশ। ভারতের প্রাক্তন জাতিসংঘ প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন বলেন, “পাকিস্তানের এই প্রচেষ্টা কোনো তাৎপর্যপূর্ণ ফল দেবে না। ভারত এই ধরনের কৌশল প্রতিহত করবে।”
এই প্রস্তাব ও জল বন্ধের পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিকে আরও জটিল করেছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই উত্তেজনা যুদ্ধে রূপ নিতে পারে, যা উভয় দেশের জন্য বিপর্যয়কর হবে। পাকিস্তানের কৃষি ও অর্থনীতি জলর উপর নির্ভরশীল, আর ভারতের কঠোর অবস্থান এই সংকটকে তীব্র করছে।