পেট্রোল-ডিজেলের দামে বড় ধসের সম্ভাবনা, ইক্রার রিপোর্টে দাবি

নয়াদিল্লি, ৭ মে: আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েলের দাম চার বছরের সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে, যা ভারতের জন্য পেট্রোল ও ডিজেলের দামে বড় ধরনের কাটছাঁটের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। রেটিং এজেন্সি ইক্রার একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ক্রুড অয়েলের দাম ৬০.২৩ ডলার প্রতি ব্যারেলে নেমে আসায় ভারত ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ক্রুড অয়েল ও এলএনজি আমদানিতে ১.৮ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারে। তবে, এই সুবিধা সরাসরি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাবে কি না, তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
ইক্রার রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে ক্রুড অয়েলের দাম ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৬০-৭০ ডলার প্রতি ব্যারেলের মধ্যে থাকতে পারে। ভারত, যিনি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ক্রুড অয়েল আমদানিকারক এবং তার ৮৫ শতাংশের বেশি চাহিদা আমদানির মাধ্যমে পূরণ করে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ক্রুড অয়েল কেনায় ২৪২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে। ইক্রার অনুমান, বর্তমান দামের প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ক্রুড অয়েল আমদানিতে ১.৮ লক্ষ কোটি টাকা এবং এলএনজি আমদানিতে ৬,০০০ কোটি টাকার সাশ্রয় হতে পারে। এছাড়া, ক্রুড অয়েল উৎপাদনকারী সংস্থাগুলোর আয় ২৫,০০০ কোটি টাকায় পৌঁছতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার পিছনে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, চীনের চাহিদা হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ উৎপাদনের ভূমিকা রয়েছে। ইক্রার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট গিরিশকুমার কদম বলেন, “ক্রুড অয়েলের দামের পতন তেল বিপণন সংস্থাগুলোর মার্জিন বাড়িয়েছে। পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ২-৩ টাকা প্রতি লিটার কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে।” তবে, তিনি সতর্ক করে বলেন, দাম কমানোর সিদ্ধান্ত তেল সংস্থা ও সরকারের নীতির উপর নির্ভর করবে।
যদিও পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য নির্ধারণ নিয়ন্ত্রণমুক্ত, ভারতীয় অয়েল মার্কেটিং কো ম্পা নিগুলো (আইওসি, বিপিসিএল, এইচপিসিএল) ২০২১ সালের শেষ থেকে দামে খুব কম পরিবর্তন করেছে। গত মার্চে ২ টাকা প্রতি লিটার কমানোর পর দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকার নির্বাচনের আগে জনগণের জন্য দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে, উচ্চ কর ও অস্থির রুপির মূল্য সাশ্রয়ের সুবিধা সীমিত করতে পারে।