সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত: পাকিস্তানে হাহাকার, ভারতের কাছে পুনর্বিবেচনার আর্জি

সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত: পাকিস্তানে হাহাকার, ভারতের কাছে পুনর্বিবেচনার আর্জি

নয়াদিল্লি, ১৪ মে ২০২৫: ভারত সরকারের সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্তে পাকিস্তানে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সম্ভাব্য জল সংকটের আশঙ্কায় শাহবাজ শরিফ সরকার ভারতের কাছে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছে। পাকিস্তানের জলসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ আলি মুর্তজা ভারতের জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব দেবশ্রী মুখার্জিকে চিঠি লিখে বলেছেন, “এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি করবে। আমরা এই বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত।” সূত্র জানায়, এই চিঠি নিয়ম অনুযায়ী ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছেন, “রক্ত আর জল একসঙ্গে বইতে পারে না।” পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলার পরদিনই ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে, যা পাকিস্তানের জন্য জীবনরেখা হিসেবে বিবেচিত। এই চুক্তির আওতায় সিন্ধু এবং এর চারটি উপনদী পাকিস্তানের ২১ কোটির বেশি মানুষের জলের চাহিদা এবং ৯০% কৃষিজমির সেচের জন্য অপরিহার্য। পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব রয়টার্সকে বলেন, “চুক্তি স্থগিতের তাৎক্ষণিক প্রভাব নেই, তবে আমরা এটি পুনর্বহালের আশা করি।”

ভারত চিনাব নদীর বাগলিহার বাঁধ থেকে পাকিস্তানের দিকে জলপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে এবং ঝিলাম নদীর কিশনগঙ্গা প্রকল্প থেকে জলপ্রবাহ কমিয়েছে। এমনকি ১৯৬৫, ১৯৭১ এবং ১৯৯৯ সালের যুদ্ধের সময়ও এই চুক্তি অটুট ছিল। ভারতের এই কঠোর পদক্ষেপকে পাকিস্তান “যুদ্ধের কাজ” হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “পাকিস্তান যতক্ষণ না সীমান্ত সন্ত্রাসবাদের সমর্থন বন্ধ করে, চুক্তি স্থগিত থাকবে।” ভারত এখন পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলোর জল নিজের কৃষি ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *