হিন্দুস্তান হাইকোর্টের মুসলিম বহুবিবাহ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

হিন্দুস্তান হাইকোর্টের মুসলিম বহুবিবাহ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

ইলাহাবাদ হাইকোর্ট মুরাদাবাদের একটি মামলার শুনানিতে মুসলিম বহুবিবাহ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে। আদালত জানিয়েছে, মুসলিম পুরুষের দ্বিতীয় বিয়ে করার অধিকার তখনই বৈধ, যখন তিনি তাঁর সকল স্ত্রীদের প্রতি সমান আচরণ করার ক্ষমতা রাখেন। কোরআনে বিশেষ পরিস্থিতিতে বহুবিবাহের অনুমতি থাকলেও, কিছু পুরুষ এটি নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে।

আদালত স্পষ্ট করেছে, ইসলামী যুগে বিধবা এবং অনাথদের সুরক্ষার জন্য কোরআনের অধীনে বহুবিবাহের শর্তসাপেক্ষ অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক সময় পুরুষরা নিজেদের স্বার্থে এটি অপব্যবহার করে।

এই মন্তব্য এসেছে মামলায় ফুরকান, খুশনুমা এবং আখতার আলীর পক্ষে দাখিল করা একটি পিটিশনের শুনানির সময়। তারা মুরাদাবাদ সিজেএম কোর্টে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বরের চার্জশিটের নিষ্পত্তি ও সমন বাতিলের দাবি করে। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ফুরকান গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন এবং বিয়ের সময় ধর্ষণ করেছেন। তবে তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, অভিযোগকারী মহিলাও স্বীকার করেছেন তাদের সম্পর্কের পর বিয়ে হয়েছে।

আইনজীবী আদালতে বলেছেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা প্রয়োগ হয় না, কারণ মুসলিম আইন ও শরীয়ত আইন ১৯৩৭ অনুযায়ী এক মুসলিম পুরুষ চারবার বিয়ে করতে পারেন। বিয়ে ও তালাকের বিষয় শরীয়ত আইনে নির্ধারিত হওয়া উচিত।

গুজরাট হাইকোর্টের ২০১৫ সালের এক রায়ের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বিয়ের বৈধতা যদি মুসলিম আইনের আওতায় হয়, তবে এটি অপরাধ নয়। তবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি প্রথম বিয়ে হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী হয় এবং পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর মুসলিম আইনের আওতায় দ্বিতীয় বিয়ে হয়, তবে দ্বিতীয় বিয়ে অবৈধ হবে এবং আইপিসির ৪৯৪ ধারা প্রয়োগযোগ্য।

আদালত ২৬ মে ২০২৫ তারিখে মামলার পরবর্তী শুনানি নির্ধারণ করেছে। জাস্টিস অরুণ কুমার সিং দেশওয়াল-এর একক বেঞ্চ এই মামলা শুনেছেন। আদালত আগামী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পিটিশনারদের বিরুদ্ধে কোনো হিংসাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *