অলিম্পিক গোল্ডের লক্ষ্যে বিসিসিআই-এর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, ২-৩ খেলায় ফান্ডিংয়ের পরিকল্পনা

অলিম্পিক গোল্ডের লক্ষ্যে বিসিসিআই-এর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, ২-৩ খেলায় ফান্ডিংয়ের পরিকল্পনা

নয়াদিল্লি: ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই), বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রীড়া সংস্থা হিসেবে, ক্রিকেটের বাইরে গিয়ে অলিম্পিকে ভারতের পদক তালিকা সমৃদ্ধ করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিসিসিআই ২-৩টি অলিম্পিক খেলা গ্রহণ করে তাদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি ও ফান্ডিংয়ের পরিকল্পনা করছে। প্যারিস অলিম্পিকে ভারতের নিরাশাজনক প্রদর্শনের পর ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের প্রস্তুতির জন্য সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিসিসিআই-এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্লা ক্রীড়া মন্ত্রী মনসুখ মান্ডাভিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বলেন, “আমরা ২-৩টি খেলার সম্পূর্ণ খরচ বহন করতে প্রস্তুত, তবে খেলা নির্বাচনের ভার মন্ত্রণালয়ের উপর ছেড়ে দিচ্ছি।”

খেল মন্ত্রণালয় দেশজুড়ে প্রতিটি খেলার জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে, যেখানে ১০০-২০০ শীর্ষ ক্রীড়াবিদকে চিহ্নিত করে অলিম্পিক চক্রের মধ্যে প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। বিসিসিআই-এর নতুন ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মতো এই কেন্দ্রগুলি অত্যাধুনিক সুবিধা ও বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষকদের দ্বারা পরিচালিত হবে। ৫৮টি কর্পোরেট হাউস এই উদ্যোগে ফান্ডিংয়ের আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা ভারতের অলিম্পিক স্বপ্নকে নতুন দিশা দেবে। বিসিসিআই অতীতে অলিম্পিকের জন্য উল্লেখযোগ্য অর্থায়ন করেছে, যেমন ২০২১ সালে টোকিও অলিম্পিকের পদকজয়ীদের জন্য ৪ কোটি টাকা এবং প্যারিস অলিম্পিকের প্রস্তুতির জন্য ৮.৫ কোটি টাকা।

ওডিশা সরকারের হকি ইন্ডিয়ার সঙ্গে সফল সহযোগিতা এই উদ্যোগের রোল মডেল। ওডিশার আর্থিক ও অবকাঠামোগত সহায়তায় ভারতীয় হকি দল টোকিও ও প্যারিস অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে, এবং ওডিশা এখন ভারতের হকি রাজধানী হিসেবে পরিচিত। বিসিসিআই-এর লক্ষ্য বেসবল, অ্যাথলেটিক্স বা অন্যান্য খেলায় অনুরূপ সাফল্য অর্জন করা, যেখানে তাদের অবকাঠামো ও কোচিংয়ের দক্ষতা কাজে লাগবে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “বিসিসিআই-এর এই পদক্ষেপ ভারতের ক্রীড়া ইতিহাসে একটি মাইলফলক হবে।”

এই উদ্যোগ ভারতের অলিম্পিক পদক তালিকা বাড়ানোর পাশাপাশি তরুণ ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণ ও সুযোগ প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিসিসিআই-এর আর্থিক শক্তি ও পরিচালন দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ভারত ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে সোনার স্বপ্ন পূরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে, খেলা নির্বাচন ও অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও মন্ত্রণালয়ের হাতে। এই পদক্ষেপ ভারতীয় ক্রীড়ার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *