উত্তর কোরিয়ার পরমাণু হুমকি, কিম জং উনের মিসাইল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চ্যালেঞ্জ

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হলেও, উত্তর কোরিয়ার মতো একটি ছোট দেশ তাদের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি হয়ে উঠছে। সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা রিপোর্টে সতর্ক করা হয়েছে যে, আগামী এক দশকের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু মিসাইল আমেরিকার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হতে পারে। উত্তর কোরিয়া সেই নয়টি দেশের মধ্যে একটি, যাদের কাছে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। অনুমান করা হয়, তাদের কাছে প্রায় ৫০টি ওয়ারহেড রয়েছে, যা মিসাইলে ব্যবহার করা যায়। গত অক্টোবরে কিম জং উন একটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) পরীক্ষা করেছেন, যার আঘাত ক্ষমতা ১৫,০০০ কিলোমিটার (৯,৩২০ মাইল), যা আমেরিকার যেকোনো অংশে আঘাত হানতে সক্ষম।
উত্তর কোরিয়ার এই মিসাইলগুলো ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রাউন্ড-বেসড মিডকোর্স ডিফেন্স সিস্টেম (জিএমডি) রয়েছে, যা ইসরায়েলের আয়রন ডোমের মতো। তবে, বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আয়রন ডোম তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী। ট্রাম্প প্রশাসন বর্তমানে ‘গোল্ডেন ডোম’ নামে একটি উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরিতে মনোযোগী, যার জন্য প্রাথমিকভাবে ২৫ বিলিয়ন ডলার এবং মোট ১০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই উদ্যোগ উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে গৃহীত হয়েছে, যা আমেরিকার জন্য কৌশলগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার মতে, উত্তর কোরিয়া একাধিক ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা করেছে, যার আঘাত ক্ষমতা আমেরিকার প্রতিটি অঞ্চলকে টার্গেট করতে পারে। বর্তমানে তাদের কাছে ১০টিরও কম আইসিবিএম রয়েছে, যার প্রতিটির আঘাত ক্ষমতা ৫,৫০০ কিলোমিটারের বেশি এবং একাধিক পরমাণু ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ২০৩৫ সাল নাগাদ এই সংখ্যা ৫০-এ পৌঁছাতে পারে, যা আমেরিকার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার গোল্ডেন ডোম প্রকল্প উত্তর কোরিয়ার হুমকি মোকাবিলায় কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
তবে, রিপোর্টগুলো ইঙ্গিত দেয় যে আমেরিকা নিজেকে শক্তিশালী করতে বেশ কিছু বড় পদক্ষেপ নিতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া এবং উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন এই হুমকি মোকাবিলার কৌশলের অংশ। উত্তর কোরিয়ার তরফে ক্রমাগত মিসাইল পরীক্ষা, বিশেষ করে হ্বাসং-১৯-এর মতো সলিড-ফুয়েল মিসাইল, আমেরিকা ও তার মিত্রদের জন্য উদ্বেগের কারণ। কিম জং উনের এই পদক্ষেপগুলো বিশ্বকে তাঁর পরমাণু শক্তির বার্তা দেওয়ার প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।