ইজরায়েলের কিংবদন্তি গুপ্তচর এলি কোহেন, সিরিয়ায় ফাঁসির ৬০ বছর পর মোসাদের অভিযান

ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ বিশ্বজুড়ে তার অভিযানের জন্য বিখ্যাত। শত্রুদের নিশ্চিহ্ন করতে এই সংস্থার সাহস ও দক্ষতা অতুলনীয়। ইজরায়েল সরকারও তাদের গুপ্তচরদের নিরাপত্তা ও সম্মানের প্রতি অটল। সম্প্রতি, মোসাদ একটি বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে ইজরায়েলের কিংবদন্তি গুপ্তচর এলি কোহেনের ২,৫০০-এর বেশি স্মৃতিচিহ্ন সিরিয়া থেকে উদ্ধার করেছে। গত রবিবার, কোহেনের ফাঁসির ৬০ বছর পূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তাঁর স্ত্রী নাদিয়া কোহেনের হাতে এই সংগ্রহ তুলে দেন।
এই অভিযানে কোহেনের হাতে লেখা চিঠি, সিরিয়ায় মিশনের সময় তোলা ছবি, গুপ্তচরবৃত্তির নথি, সিরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার জব্দ করা ফাইল, পাসপোর্ট, জাল পরিচয়পত্র, তাঁর দামেস্কের বাড়ির চাবি এবং নাদিয়া কোহেনের বিশ্বনেতাদের লেখা চিঠি উদ্ধার হয়েছে। নেতানিয়াহু বলেন, “এই সংগ্রহ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষা দেবে এবং আমাদের নিখোঁজদের ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকারের প্রতীক।”
১৯৬০-এর দশকে মোসাদের অন্যতম সফল গুপ্তচর এলি কোহেন সিরিয়ার রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের শীর্ষে পৌঁছে যান। কামাল আমিন তাবেত নামে জাল পরিচয়ে তিনি সিরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উপদেষ্টা পর্যন্ত হয়েছিলেন। তাঁর সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্য ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে ইজরায়েলকে গোলান হাইটস দখলে সহায়তা করে। তিনি রেডিও, গোপন চিঠি এবং তিনবার গোপনে ইজরায়েল সফরের মাধ্যমে তথ্য পাঠাতেন।
১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে সোভিয়েত সহায়তায় সিরিয়ার গোয়েন্দারা কোহেনের রেডিও সংকেত শনাক্ত করে। ২৪ জানুয়ারি তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ১৮ মে, ১৯৬৫-এ দামেস্কের মার্জেহ চত্বরে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক ক্ষমা প্রার্থনা সত্ত্বেও সিরিয়া তাঁর দেহ ফেরত দেয়নি। মোসাদ প্রধান ডেভিড বার্নিয়া বলেন, “এলি কোহেনের সাহস ও নিষ্ঠা আমাদের প্রেরণা। আমরা তাঁর দেহ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাব।”