জাসুস তৈরির মাস্টারমাইন্ড: কীভাবে কাজ করেন RAW-এর কেস অফিসার

নয়াদিল্লি, ১৯ মে ২০২৫: পাকিস্তানের অব্যাহত গোপন ষড়যন্ত্র ও জাসুসি কার্যকলাপ ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। পহেলগাম হামলার পর থেকে ভারতে ১০ জন জাসুস ধরা পড়েছে, যার মধ্যে জ্যোতি মলহোত্রার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মকর্তা দানিশের সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন। এখন ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলো সেই কেস অফিসারদের খুঁজছে, যারা ভারতীয় নাগরিকদের নিজ দেশের বিরুদ্ধে জাসুসি করতে প্রলুব্ধ করছে। আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা জগতে এই কেস অফিসাররা বিদেশে জাসুস নিয়োগের মূল কাণ্ডারি। ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (RAW)-এর কেস অফিসাররা গোপনে এই দায়িত্ব পালন করেন।
ভারতে কেস অফিসার দুই ধরনের: গার্হস্থ্য এবং আন্তর্জাতিক। গার্হস্থ্য কেস অফিসাররা হলেন পুলিশ, সিবিআই বা এনআইএ-এর মতো সংস্থার কর্মকর্তারা, যারা দেশের আইনশৃঙ্খলার মধ্যে তদন্ত পরিচালনা করেন। অন্যদিকে, RAW-এর কেস অফিসাররা আন্তর্জাতিক স্তরে গোপনে কাজ করেন। তাদের প্রধান কাজ বিদেশে জাসুস শনাক্ত করা, নিয়োগ করা এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অফিসাররা প্রথমে এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেন, যারা টাকার লোভে বা চাপে নিজ দেশের বিরুদ্ধে জাসুসি করতে রাজি হন। “এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ গোপনীয় এবং জটিল,” বলেন প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্মকর্তা অজিত সিং। এই জাসুসদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
কেস অফিসার হওয়ার কোনো সরাসরি নিয়োগ প্রক্রিয়া নেই। RAW-এর কর্মকর্তাদেরই এই দায়িত্ব দেওয়া হয়। RAW-এ নিয়োগের জন্যও কোনো সরাসরি ভর্তি নেই। সাধারণত UPSC সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষার মাধ্যমে IAS, IPS, IFS কর্মকর্তাদের থেকে প্রার্থী নির্বাচন করা হয়। এছাড়া, গোয়েন্দা ব্যুরো (IB) এবং সেনা, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের অভিজ্ঞ কর্মকর্তারাও ডেপুটেশনে RAW-এ যোগ দিতে পারেন। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কঠোর মানসিক ও শারীরিক পরীক্ষা, ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়। বিদেশি ভাষার জ্ঞান একটি বড় সুবিধা। “RAW-এ কেস অফিসার হওয়া মানে গোপনীয়তা ও দেশের প্রতি অটল নিষ্ঠা,” বলেন এক প্রাক্তন RAW কর্মকর্তা। এই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে যে শুধুমাত্র সেরা প্রতিভারাই দেশের জন্য জাসুস নিয়োগের এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পান।