সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ মামলা: তিনটি মূল ইস্যু নিয়ে সিব্বল-মেহতার তর্ক, দরগাহ নিয়ে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন

ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন, ২০২৫-এর সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মঙ্গলবার (২০ মে, ২০২৫) শুনানি শুরু হয়েছে। প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি এজি মাসিহের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করছে। শুনানির শুরুতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, তিনটি প্রধান ইস্যুতে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশের আবেদনের জবাব তিনি দাখিল করেছেন। এই ইস্যুগুলো হলো: (১) আদালত কর্তৃক ওয়াকফ ঘোষিত সম্পত্তি বাতিল না করা, (২) কালেক্টরের তদন্তের সময় সম্পত্তির ওয়াকফ মর্যাদা স্থগিত না করা, এবং (৩) কেন্দ্রীয় ও রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে শুধুমাত্র মুসলিম সদস্য নিয়োগ (এক্স-অফিসিও সদস্য ছাড়া)।
যাচিকাকারীদের পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট কপিল সিব্বল এই তিনটি ইস্যুতে আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখার বিরোধিতা করে বলেন, “এটি শুধু তিনটি ইস্যুর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, পুরো ওয়াকফ সম্পত্তির উপর অধিকারের প্রশ্ন।” তিনি যুক্তি দেন, আইনটি সংবিধানের ২৬ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে, যা ধর্মীয় সম্প্রদায়কে তাদের ধর্মীয় বিষয় পরিচালনার অধিকার দেয়। সিব্বল বলেন, “রাষ্ট্র মসজিদ বা কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষণে অর্থায়ন করতে পারে না। তাই মানুষ প্রায়শই জীবনের শেষে তাদের সম্পত্তি ওয়াকফে দান করে। মন্দিরে চড়া-উৎসর্গ থাকে, কিন্তু মসজিদ বা কবরস্থানে ২০০০-৩০০০ কোটি টাকার সম্পদ থাকে না।” এই সময় প্রধান বিচারপতি গাভাই মন্তব্য করেন, “কিন্তু আমি দরগাহে যাই, সেখানে এমনটা প্রায়ই দেখা যায়।” সিব্বল জবাবে বলেন, “আমি মসজিদের কথা বলছি, দরগাহ নয়।” এই বিনিময় শুনানিতে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত হয়ে ওঠে।
তুষার মেহতা যুক্তি দেন, সরকার ২০১৩-২৪ সালে ওয়াকফ সম্পত্তির “অভূতপূর্ব বৃদ্ধি” এবং অপব্যবহার রোধে সংশোধনী আনা হয়েছে। তিনি বলেন, “লাখ লাখ প্রতিনিধিত্ব পেয়েছি যে গ্রামের পর গ্রাম ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষিত হচ্ছে।” সিনিয়র অ্যাডভোকেট অভিষেক মনু সিংভি জোর দিয়ে বলেন, এই মামলার সারা ভারত জুড়ে প্রভাব রয়েছে, তাই এটি হাইকোর্টে পাঠানো উচিত নয়। শুনানিতে সিব্বল ও মেহতার তর্ক তিনটি ইস্যুকে ছাড়িয়ে ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার মৌলিক প্রশ্নে পৌঁছায়, যা আইনটির সাংবিধানিক বৈধতার উপর আলোকপাত করে।