জাসুসি কাণ্ডে জ্যোতি মলহোত্রা: পুলিশের দুই বয়ানে কী রহস্য উন্মোচিত?

হরিয়ানার ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রাকে গত শনিবার পাকিস্তানের হয়ে জাসুসির অভিযোগে হিসার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। পাঁচ দিনের হেফাজতের সময়ে তদন্তে প্রতিদিন নতুন তথ্য সামনে আসছে। মূলধারার মিডিয়া থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত জ্যোতির নামে নানা গুঞ্জন ছড়িয়েছে—কখনও পাকিস্তানি কর্মকর্তার সঙ্গে তার বিয়ের খবর, কখনও ধর্মান্তরণের দাবি। এই সব ভ্রান্তির জবাবে হিসার পুলিশ একটি প্রেস নোট জারি করে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছে, যা মামলার তত্ত্বকে নতুন দিশা দিয়েছে।
হিসার পুলিশ সুপার শশাঙ্ক কুমার সাওয়ান বুধবার এক প্রেস নোটে জানিয়েছেন, ১৬ মে জ্যোতিকে ভারতীয় বিচার সংহিতার ধারা ১৫২ এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি পাকিস্তান হাইকমিশনের কিছু কর্মকর্তার (পিআইও) সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন এবং কিছু তথ্যের আদান-প্রদান করেছিলেন। পুলিশ জ্যোতির কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস জব্দ করেছে। এছাড়া, কুরুক্ষেত্রের বাসিন্দা হরকীরত সিং, যিনি ভিসা সেবা প্রদান করেন, তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে, তবে তাকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই ডিভাইসগুলো ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
জ্যোতির বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোপন তথ্য পাকিস্তানের কাছে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল। তবে পুলিশ জানিয়েছে, “এখনও পর্যন্ত জ্যোতির কাছে সামরিক, প্রতিরক্ষা বা কৌশলগত তথ্যের প্রবেশাধিকার ছিল, এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।” এছাড়া, পাহলগামে ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার সময় জ্যোতি পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন বলে দাবি করা হলেও, পুলিশ স্পষ্ট করেছে যে তার কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বা সন্ত্রাসী ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় জ্যোতির ধর্মান্তরণের দাবিও ছড়িয়েছে, যেখানে বলা হয়েছিল পাকিস্তানি কর্মকর্তা দানিশের সঙ্গে যোগাযোগের পর তিনি ধর্ম পরিবর্তন করেছেন। পুলিশ এই দাবি খারিজ করে বলেছে, “কোনো পিআইওর সঙ্গে জ্যোতির বিয়ে বা ধর্মান্তরণের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।” এই বয়ানে পুলিশ মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়াকে ভ্রান্ত তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে, কারণ এটি জাতীয় নিরাপত্তার তদন্তে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।