অগ্নিপথের তরুণ যোদ্ধারা পাকিস্তানকে দিলো কড়া জবাব, অপারেশন সিন্দুরে ইতিহাস

অগ্নিপথের তরুণ যোদ্ধারা পাকিস্তানকে দিলো কড়া জবাব, অপারেশন সিন্দুরে ইতিহাস

২২ এপ্রিল, ২০২৫-এ জম্মু-কাশ্মীরের পাহলগামে সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ৬-৭ মে মধ্যরাতে ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করে। এই অপারেশনে অগ্নিপথ প্রকল্পের অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ৩০০০ অগ্নিবীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, পাকিস্তানের সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস করে এবং তাদের পাল্টা হামলা ব্যর্থ করে। এই তরুণ সৈনিকদের গড় বয়স মাত্র ২০ বছর, এবং তারা প্রথমবারের মতো যুদ্ধের পরিস্থিতিতে অসাধারণ সাহস ও দক্ষতা প্রদর্শন করেছে।

অগ্নিবীরদের ভূমিকা: হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, অগ্নিবীররা বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র ও সিস্টেম পরিচালনা করেছে। তারা চারটি বিশেষ ক্ষেত্রে কাজ করেছে: গানার, অগ্নি নিয়ন্ত্রণ অপারেটর, রেডিও অপারেটর এবং ভারী অস্ত্রবাহী যানের চালক। তারা আকাশতীর (ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা), কাঁধে বহনযোগ্য মিসাইল, এল-৭০, জেডইউ-২৩-২বি, পেচোরা, শিলকা, ওএসএ-একে, স্ট্রেলা এবং তুঙ্গুস্কার মতো অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট সিস্টেম পরিচালনায় সক্রিয় ছিল। এছাড়া, তারা আকাশ ও অন্যান্য সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল স্থাপন ও উৎক্ষেপণে সহায়তা করেছে। পাকিস্তানের ড্রোন ও মিসাইল হামলা ব্যর্থ করতে তাদের দক্ষতা নিয়মিত সৈনিকদের সমতুল্য ছিল।

অপারেশন সিন্দুরের পটভূমি: পাহলগামে হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন, যেখানে সন্ত্রাসীরা ধর্মীয় পরিচয় জিজ্ঞাসা করে হিন্দু পুরুষদের লক্ষ্য করে হত্যা করে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বা ও জৈশ-ই-মোহাম্মদকে দায়ী করে। অপারেশন সিন্দুরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর রাফাল জঙ্গি বিমান, ব্রাহ্মোস ক্রুজ মিসাইল এবং ইন্দো-ইসরায়েলি স্কাইস্ট্রাইকার লয়টারিং মিউনিশন ব্যবহার করে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান, এই হামলায় প্রায় ১০০ জঙ্গি নিহত হয়।

পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ও যুদ্ধবিরতি: পাকিস্তান দাবি করে, ভারতের হামলায় ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়, যদিও এই দাবি যাচাই করা যায়নি। পাকিস্তান ১০ মে অপারেশন বুনিয়ান-আল-মারসুস নামে পাল্টা হামলা চালায়, যা ভারতীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে অগ্নিবীরদের দক্ষতায় ব্যর্থ হয়। ১০ মে সন্ধ্যা ৫টা থেকে উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, যদিও পরে দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।

অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রমাণ: অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, অপারেশন সিন্দুরে অগ্নিবীরদের কার্যকারিতা এই প্রকল্পের সমালোচকদের মুখ বন্ধ করেছে। প্রতি বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটে ১৫০-২০০ অগ্নিবীর পাকিস্তানের মিসাইল ও ড্রোন হামলা প্রতিহত করেছে। এক্স-এ একটি পোস্টে বলা হয়, “অগ্নিবীররা অপারেশন সিন্দুরে দেশের গর্ব বাড়িয়েছে। তরুণ শক্তির এই জয় অগ্নিপথের সাফল্যের প্রমাণ।”

প্রভাব ও তাৎপর্য: অপারেশন সিন্দুর ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং সামরিক শক্তির প্রদর্শন। অগ্নিবীরদের সাহস ও প্রশিক্ষণ এই অপারেশনে নতুন ইতিহাস রচনা করেছে। তবে, সীমান্তে উত্তেজনা এবং অর্থনৈতিক চাপের কারণে ভবিষ্যতে সতর্কতার প্রয়োজন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *