ভারতীয় পর্যটকদের কমে যাওয়ায় তুরস্কের অর্থনীতিতে ধাক্কা, এরদোয়ানের বিতর্কিত মন্তব্যের ফল

তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ভারত-বিরোধী বক্তব্য এবং কাশ্মীর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি তুরস্কের পর্যটন শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তুরস্কের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১ কোটি ৫৯ লাখ বিদেশি পর্যটক তুরস্কে এসেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ০.৬% কম। যদিও এই হ্রাস সামান্য মনে হতে পারে, তুরস্কের দ্রুতবর্ধনশীল পর্যটন খাতের জন্য এটি উল্লেখযোগ্য ক্ষতি। ভারত থেকে আগত পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা এই পতনের অন্যতম প্রধান কারণ।
ভারত প্রতি বছর প্রায় ৩ লাখ পর্যটক তুরস্কে পাঠায়, যারা শপিং, হোটেল এবং ট্যুর প্যাকেজে বিপুল অর্থ ব্যয় করে, তুরস্কের পর্যটন আয়ে শত শত কোটি টাকার অবদান রাখে। ২০২৪ সালে ভারতীয় পর্যটকরা তুরস্কে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩৩০০ কোটি টাকা) ব্যয় করেছিলেন। কিন্তু এরদোয়ানের ভারত-বিরোধী অবস্থান এবং পাকিস্তানের প্রতি সমর্থনের কারণে ভারতে #BoycottTurkey প্রচারণা জোরদার হয়েছে। ফলে বুকিং ৬০% কমে গেছে এবং বাতিলকরণ ২৫০% বেড়েছে। ভারতীয় ট্রাভেল এজেন্সিগুলো, যেমন EaseMyTrip এবং MakeMyTrip, তুরস্কে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে পরামর্শ দিয়েছে এবং অনেকে বুকিং বন্ধ করেছে।
তুরস্কের পর্যটন শিল্প, যা দেশের জিডিপির ১২% এবং ৩০ লাখের বেশি কর্মসংস্থানের উৎস, ভারতীয় পর্যটকদের উপর নির্ভরশীল। এই পতন এরদোয়ান সরকারের উপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়িয়েছে। তুরস্কের বিরোধী দল এটিকে সরকারের বিতর্কিত বিদেশ নীতির ফল বলে সমালোচনা করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভারতের মতো বড় বাজারের সঙ্গে সম্পর্ক না সংশোধন করলে তুরস্কের পর্যটন খাতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। ভারতীয়রা এখন গ্রিস, জর্জিয়া, এবং কাজাখস্তানের মতো বিকল্প গন্তব্যের দিকে ঝুঁকছে, যা তুরস্কের জন্য আরও চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।